ডাকসু ইস্যুতে ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাবনা উঠলো
- ১৫ মে ২০২৫, ১৯:২২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) গঠনতন্ত্র সংস্কার ও নির্বাচন ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্য লাউঞ্জে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পদাধিকার বলে উপাচার্যের সভাপতি হওয়া না হওয়া, কিছু সম্পাদকীয় পদের নিয়মে পরিবর্তন, ভোটের আয়োজন আবাসিক হলে না করে একাডেমিক ভবনে করা, ৩০ বছরের পরেও প্রার্থিতার সুযোগ দেওয়া, ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের প্রার্থী হওয়া ও ভোটের বিষয়ে বিশেষ বিবেচনা, ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্তদের প্রার্থীতা বা ভোট দেওয়া নিয়ে স্পষ্ট বিধান প্রণয়নসহ নানা বিষয়ে প্রস্তাবনা উঠে এসেছে।
জানা গেছে, সভায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদ, ইনকিলাব মঞ্চ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, পাহাড়ি ছাত্র সংসদসহ মোট ১১টি সংগঠন অংশ নেয়। এছাড়াও আগামীকাল (বুধবার) বাকি ছাত্র সংগঠনগুলো নিয়ে আলোচনায় বসবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে নিয়ে আসা দাবি জানানো হয়েছে। পদাধিকার বলে উপাচার্য সভাপতি হওয়ার বিষয়ে আমরা সবাই মিলে দ্বিমত পোষণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ডাকসু ক্যান্ডিডেট হতে হলে নিয়মিত শিক্ষার্থী হতে হবে এবং ৩০ বছরের কম বয়স হতে হবে। কিন্তু আমাদের অনেকের দাবি ছিল, যদি কারো ৩০ বছরেরও বেশি বয়স থাকে এবং সে যদি এমফিল বা পিএইচডির শিক্ষার্থী হয় তাহলে সে ক্যান্ডিডেট হতে পারবে এমন নিয়ম হোক। কোষাধ্যক্ষসহ আরো কিছু পদের ক্ষেত্রে সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে। গঠনতন্ত্র সংস্কারে আমাদের প্রস্তাবগুলো যেন বিবেচনা করা হয়, সেই দাবি আমরা জানিয়েছি।
স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ বলেন, ডাকসু নিয়ে গঠন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন কমিটির কার্যক্রমের অগ্রগতি ও আমাদের পর্যবেক্ষণ বা অভিমতের বিষয়কে কেন্দ্র করে মূলত এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন প্রস্তাবনাই রেখেছে। সেই ধারাবাহিকতায় আমরাও কিছু প্রস্তাব রেখেছি। সেগুলোর মধ্যে ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার ও প্রার্থিতার ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া, ভোটকেন্দ্র হল থেকে বের করে একাডেমিক ভবন বা অন্যত্র সরিয়ে আনা, পোস্টেড ও চিহ্নিত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ভোটাধিকার ও প্রার্থীতা বাতিলের বিষয়টি স্পষ্ট করা এবং প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন যেন হয়, এ ব্যাপারে আর সময়ক্ষেপণ না করা অন্যতম।
সভার সার্বিক আলোচ্যসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজকের সভায় মোট ১১টি ছাত্র সংগঠন অংশগ্রহণ করেছে। যাদেরকে আমরা ডেকেছি তারা সকলেই এসেছে। আগামীকাল আবার বাকিদেরকে ডাকা হয়েছে। ডাকসু গঠনতন্ত্রের যে সংস্কার আমরা করেছি সেই সংস্কারের বিষয়ে তাদের অভিমত আমরা শুনেছি। এক্ষেত্রে তাদের বেশ কিছু প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। যেমন: পদাধিকার বলে উপাচার্যের সভাপতি হওয়া না হওয়া, কিছু সম্পাদকীয় পদের নিয়মে পরিবর্তন, ভোটের আয়োজন হলে না করে একাডেমিক ভবনে করা ইত্যাদি। ছাত্র সংগঠনগুলোর এ সকল প্রস্তাব আমরা বিবেচনায় নিয়েছি।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে আমরা আলাপ-আলোচনা করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান অনুসরণ করে যতোটুকু পরিবর্তন সম্ভব ততটুকু আমরা কাজ করব, আশ্বাস আমরা তাদেরকে দিয়েছি। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন যে, কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে কাজ করতে হলে আমাদের মূল আইন বা অধ্যাদেশ পরিবর্তন করতে হয়, সেটা অনেক প্রক্রিয়া ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যার কারণে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সাময়িকভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে। কিন্তু আমরা শিক্ষার্থী ও সামগ্রিক কল্যাণ বিবেচনায় আমরা অবশ্যই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে কাজ করে যাব।