আতঙ্ক ও প্রাণভয়ে যে ভবনে চলে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ
- ১৮ জুন ২০২৫, ২০:০৫
ভবনের বিম ও ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ে বেরিয়ে গেছে রড। সংস্কারের অভাবে প্রায় অর্ধশত বছর বয়সী পুরোনো ভবনের জীর্ণ ও ভগ্নদশা দেখা দিয়েছে। স্যাঁতসেঁতে অবস্থার মধ্যেই রয়েছে জমিজমার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও বালাম বই। ফলে গুরুত্বপূর্ণ দলিল দস্তাবেজ ও নথিপত্র নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাবনার ভাঙ্গুড়ায উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রারের পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ। উপায়ান্তর না পেয়ে প্রাণভয়েও বাধ্য হয়ে এই ভবনেই কাজ করতে হচ্ছে সাব-রেজিস্ট্রারসহ কর্মচারীদের।
তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি থেকে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম ও নথিপত্র যত দ্রুত সম্ভব অন্যত্র সরিয়ে নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভাঙ্গুড়াকে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠার কিছু দিন পর থেকেই উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম এরপর থেকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন ও সরকারি বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এরই মধ্যে উপজেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসনিক ভবনের পূর্বদিকে একটি ভবনে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর থেকে প্রায় অর্ধশত বছর কেটে গিয়েছে। ভবনের বিম ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে বেরিয়েছে রড, যা দেখলে যে কেউ এই ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হবে। এই ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্য কোনো উপায় না পেয়ে নিয়মিত এখানে অফিস করে যাচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সঙ্গে নির্মাণ হওয়ার ফলে ভবনটি বেশ পুরাতন।
একই সঙ্গে নির্মিত হওয়া প্রশাসনিক ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে পাশেই একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে উপজেলা পরিষদের বেশির ভাগ অফিস পুরাতন ভবন থেকে নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ওই পুরাতন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই উপজেলার দলিল-দস্তাবেজসহ উপজেলার ভূমিসংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে। পুরাতন, স্যাঁতসেঁতে জরাজীর্ণ ভবন হওয়ার কারণে দলিলসহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র গুলির টেম্পার কমে গিয়ে নষ্ট হওয়ার পথে বসেছে।
দলিল লেখক আক্তার হোসেন বলেন, ভূমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। কিন্তু পুরোনো, জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ঢুকতেই ভয় লাগে। মনে হয় কখন জানি ভেঙে পড়ল।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়ার সাব-রেজিস্ট্রার রিজভী ইবনে মাহমুদ বলেন, ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও কয়েক বছর আগেই ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু উপায়ান্তর না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে এখানে অফিস করতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলি ঝুঁকিতে রয়েছে।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসটি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হলে তাদের নিতে হবে। তবে এ বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার উদ্যোগ নিলে তাকে সহযোগিতা করবেন বলেও তিনি জানান।