চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতাল
১৮ মাস আগে নির্মাণ হয়েছে ভবন, চিকিৎসা শুরু হয়নি আজও
- যশোর প্রতিনিধি
- ২১ জুন ২০২৫, ১৪:০২
ভবন নির্মাণের ১৮ মাস পার হলেও যশোরের চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু হয়নি। অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে জানালা-দরজা ও আসবাবপত্র। প্রশাসনিক অনুমোদন না পাওয়ায় শুরু হয়নি কার্যক্রম। ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ভবনটি চালু না হওয়ায় রোগীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জায়গা সংকটের কারণে তারা ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।
চলতি মাসে ভবনটি চালু করার অনুমোদন মিলতে পারে বলে আশা সিভিল সার্জনের। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে তিনটি গুচ্ছে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতালের এ অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়তলাবিশিষ্ট হাসপাতালের মূল ভবন ২১ কোটি ৪৬ লাখ ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল এ কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এই কাজ শেষ হয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের পাঁচটি আবাসিক ভবন ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট এসব ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া অক্সিজেন প্ল্যান্টসহ সরবরাহ লাইন স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার উদ্যোগ হিসেবে নতুন ভবনটি নির্মিত হয়। কিন্তু ভবনটির কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় রোগীরা সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন। চৌগাছা ছাড়াও পাশের ঝিকরগাছা, ঝিনাইদহের মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। ফলে ৫০ শয্যার তুলনায় রোগী কয়েকগুণ বেশি থাকে। এ কারণে রোগীর ঠাঁই মেলে ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায়। ১০০ শয্যার ভবনটি চালু হলে দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হবে।
সিংহঝুলী গ্রামের শাহিনুর রহমানে বলছিলেন, জায়গা সংকটের কারণে হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে যেখানে-সেখানে। নোংরা পরিবেশে থাকতে তাদের অসুবিধা হচ্ছে। ফলে দ্রুত নতুন ভবনটি চালু করার দাবি তার।
আরো পড়ুন: তিন সীমান্ত দিয়ে আরও ১০৩ ভারতীয়র অনুপ্রবেশ
চৌগাছা হাসপাতালটি নামেই মডেল বলে মত হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ারুল আবেদীনের। তিনি বলেন, হাসপাতালে জায়গা সংকটের পাশাপাশি চিকিৎসক সংকট রয়েছে। রোগীর দুর্ভোগ লাঘবে নতুন ভবন চালু ও চিকিৎসকের শূন্য পদ পূরণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর নাজমুল হক জানান, প্রকল্পের কাজ শেষ করে ভবনগুলো স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন সব দায়দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের। ভবন কবে নাগাদ চালু করবে সেটাও তাদের বিষয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসানুল মিজান রুমী বলেন, প্রশাসনিক অনুমোদন না পেলে হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় আসবাব, জনবল, রোগীদের জন্য বরাদ্দ- এসব প্রশাসনিক অনুমোদনের বিষয়।
এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, নতুন ভবন চালু করতে প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কয়েকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও নিয়মিতভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে। চলতি মাসে অনুমোদন মিলতে পারে বলে তিনি আশাবাদী।