মিরাজের বিরল রেকর্ডে ইনিংস ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দল
বাংলাদেশ দল © সংগৃহীত

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে হারলেও চট্টগ্রাম টেস্টে দাপট দেখিয়ে জিতেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের এই জয়ে বড় অবদান মেহেদী হাসান মিরাজের। সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নেন এই অলরাউন্ডার। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তৃতীয় দিনেই সাগরিকায় জয়োল্লাস করেছে স্বাগতিকরা। আর ইনিংস ও ১০৬ রান ব্যবধানে জিতে ১-১ সমতায় সিরিজ শেষ করলো টাইগাররা।

স্বাগতিকদের ২১৭ রানের লিডের বিপরীতে দলীয় ৮ রানেই ব্রায়ান বেনেট ও নিক ওয়েলচকে হারায় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের সপ্তম ওভারে তিন বলের মধ্যে দুটি উইকেটই তুলে নেন তাইজুল। প্রথমে বেনেটকে সাদমানের ক্যাচ বানিয়ে এবং এক বল পর নিক ওয়েলচকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান এই স্পিনার।

চা-বিরতির পর দলীয় ২২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় রোডেশিয়ানরা। নাঈম হাসানের বলে সাদমানের দুর্দান্ত বনে ফেরেন উইলিয়ামস (৭)।

এরপর ইনিংসের ৩০তম ওভারে রোডেশিয়ান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মিরাজ। ওভারের প্রথম বলে আরভিনের (২৫) পর রানের খাতা খোলার আগেই শেষ বলে মাধেভেরেকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান এই অলরাউন্ডার।

পরের ওভারে নতুন ব্যাটার টিসিগাকেও সাজঘরের পথ দেখান টাইগার এই স্পিনার। মিরাজের বলে শর্ট লেগে এনামুল হকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। এতে ৮ বলে মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা।

ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকেও নিজের শিকার বানিয়েছেন মিরাজ। তাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে তাইজুলের তালুবন্দি হন মাসাকাদজা।

এরপর বেন কারানকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের ১৩তম ফাইফার পূরণ করেন অনবদ্য সেঞ্চুরির ছোঁয়া পাওয়া মিরাজ। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন কারান। তবে ফিফটি ছোঁয়ার আগেই সফরকারীদের এই ওপেনারকে জাকের আলির মুঠোবন্দি করে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান মিরাজ।

এতে সেঞ্চুরি পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট—বিরল এই কীর্তিতে নাম লেখান মিরাজ। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর দেশের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ফাইফার নেওয়ার কীর্তি গড়েন এই অলরাউন্ডার। যদিও সাকিবের এই কীর্তি দুবার রয়েছে। সব মিলিয়ে টেস্টে ইতিহাসে এমন কীর্তি নেওয়ার ঘটনা ৩৯টি।

দিনের শেষদিকে রিচার্ড এনগারাভাকেকেও উইকেটে থিতু হতে দেননি তাইজুল। ডিপ মিডউইকেটে হাসান মাহমুদের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরান এই স্পিনার। এই ম্যাচে তাইজুলের এটি নবম উইকেট। শেষবেলায় আর টিকতে পারেনি সফরকারীরা। শেষ ব্যাটার হিসেবে রান আউট হয়েছে মাসাকেসা।

এর আগে, ওপেনার সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ৬৪ রানে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ২২৭ রানে জবাবে দিন শেষে ৭ উইকেটে ২৯১ রান করে বাংলাদেশ। সাদমান ১২০ রানে আউট হন। এ ছাড়া মুশফিকুর রহিম ৫৯ বলে ৪০ ও ওপেনার এনামুল হক বিজয় ৮০ বলে ৩৯ রান করেন। তৃতীয় দিনে মেহেদী মিরাজের মাইলফলক আর ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৪৪৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। এতে প্রথম ইনিংসে ২১৭ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা।

এরও আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২২৭ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ১৬৬ বল মোকাবিলায় সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন শন উইলিয়ামস। এ ছাড়া ৫৪ রান করেন নিক ওয়েলচ। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ইসলাম ৬টি, নাঈম হাসান দুটি ও তানজিম সাকিব একটি উইকেট শিকার করেন।