সাবেক এমপি কাজী নাবিল ও পরিবারের ৩৬২ একর জমি জব্দ

কাজী নাবিল আহমেদ
কাজী নাবিল আহমেদ © সংগৃহীত

যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেমকন গ্রুপের অন্যতম পরিচালক কাজী নাবিল আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৩৬২ একর জমি, বহুতল ভবন, মূল্যবান ফ্ল্যাটসহ বিপুল সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে অনুমতি ছাড়া বিনিয়োগ করা প্রায় ৭৫ কোটি টাকাও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক রেজাউল করিমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, এই সম্পদের উৎস সন্দেহজনক এবং অবৈধ লেনদেন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তদন্ত চলছে। এ প্রেক্ষাপটে এসব সম্পদের হস্তান্তর বা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে—খুলনা ও রূপসায় সর্বমোট ২৭২ একর জমি, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, বোদা ও সদর উপজেলায় ৭০ একরের বেশি জমি, ঢাকার ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও গুলশানে অবস্থিত ফ্ল্যাট, প্লট ও ছয়তলা ভবনের একাধিক অংশ, যশোরে কাজীপাড়ায় ১৫ দশমিক ৯৮ একর জমি এবং পারিবারিক বাড়ি, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে জমি।

দুদক জানায়, এ সম্পদ রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য নাবিল, তার প্রয়াত বাবা কাজী শাহেদ আহমেদ, মা আমিনা আহমেদ, ভাই কাজী আনিস আহমেদ ও কাজী ইনাম আহমেদের নামে।

বিশেষ করে ধানমন্ডিতে ১১ শতক জমির ওপর ছয়তলা ভবনের এক-তৃতীয়াংশ এবং গুলশানের অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট রয়েছে পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে।

সবচেয়ে আলোচিত অংশ যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করা ৬১ লাখ ৩৯ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে, অ্যাগনেটা এলএলসি নামক কোম্পানিতে এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমোদন ছাড়াই।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে আদালতের আদেশে কাজী পরিবারের নামে থাকা ৮৩টি ব্যাংক হিসাব ও ৩৬টি কোম্পানির ৪ কোটি ২৬ লাখ শেয়ারও অবরুদ্ধ করা হয়।

দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কাঠামোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে এবং চূড়ান্ত অনুসন্ধান শেষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।