‘গ্রেপ্তারের শঙ্কা’য় ৪০০ কিলোমিটার ঘুরে আমেরিকা গেলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

আমেরিকায় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

ফেব্রুয়ারি মাসেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তিনি। যুদ্ধ আবহে দু’মাসের মাথায় আবার মার্কিন সফরে গেলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) দোষী সাব্যস্ত করেছে তাকে। এই অবস্থায় শত্রু দেশের উপর দিয়ে যাওয়া যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। সে কথা মাথায় রেখেই প্রায় ৪০০ কিলোমিটার বাড়তি রাস্তা পার করে ঘুরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন তিনি।

আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) টাইমস অব ইসরায়েল তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, গাজা যুদ্ধ পরিস্থিতি ও দেশটির ওপর ট্রাম্পের শুল্কারোপ নিয়ে আলোচনা করতে স্ত্রী সারাকে নিয়ে গতকাল রবিবার রাতে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

এর আগে সফর সূচি ঘোষণা করার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে রবিবার হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট থেকে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি।
 
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম দৈনিক হারেৎজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নেতানিয়াহুকে বহনকারী উইং অব জায়ন রাষ্ট্রীয় বিমানটি বুদাপেস্ট থেকে ওয়াশিংটনের যাত্রা পথে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার বেশি পাড়ি দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। ফলে তাকে বহনকারী বিমানটিকে জরুরি অবতরণে বাধ্য করা হতে পারে এমন কয়েকটি দেশের আকাসসীমা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
 
হারেৎজ বলছে, ইসরাইলি কর্মকর্তারা মনে করেন, আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলো গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জারি করা আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করবে। ফলে এসব দেশের আকাশসীমা এড়িয়ে উইং অব জায়ন ক্রোয়েশিয়া, ইতালি এবং ফ্রান্সের ওপর দিয়ে ওয়াশিংটনে পৌঁছায়।

জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের কোপে তোলপাড় গোটা বিশ্ব। রেহাই পায়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু দেশ ইজরায়েলও। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছেন বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। যদিও তাদের টপকে বন্ধু ইজরায়েল সবার আগে পেয়েছেন ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। সেই মতো আজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন নেতানিয়াহু। এই সফরে নেতানিয়াহু ট্রাম্প ও সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করবেন। তবে তার এই সফর ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে। 

এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েল ও হামাস যুদ্ধের জেরে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। ফলে আদালতের এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে মান্যতা দিতে পারে যে কোনও দেশ। নেতানিয়াহুর আশঙ্কা হাঙ্গেরি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সহজ পথে এমন কিছু দেশ রয়েছে যারা সুযোগ পেলে এই পরোয়ানা জারি করে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেন। 

ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই হাঙ্গেরি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য ৪০০ কিলোমিটার বা ২৪৮ মাইল পথ বাড়তি ঘুরতে হয়েছে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। সে দেশের গোয়েন্দা বিভাগের অনুমান আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পক্ষ থেকে জারি করা এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারে। এই অবস্থায় এই তিন দেশকে এড়িয়ে গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স এবং আটলান্টিক মহাসাগর হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।