বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতি, তবুও ঈদের মুহূর্তগুলো খুবই উপভোগ্য

খুকৃবির বিদেশি শিক্ষার্থীদের ঈদ উদযাপন

খুকৃবির বিদেশি শিক্ষার্থীদের ঈদ উদযাপন

মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর আসে এই আনন্দময় মুহূর্ত। ঈদ উপলক্ষে মিলে ছুটি, আর ছুটিতে সকলেই ফিরে যায় তার নিজের নীড়ে, পরিবারের কাছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের বাড়িতে ফিরলেও, বিদেশি শিক্ষার্থীদের কেমন কাটে এই ঈদের ছুটি তাই বলছেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) বিদেশি শিক্ষার্থীরা।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুকৃবি) বর্তমানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৩ জন নেপালি শিক্ষার্থী রয়েছেন। পরিবার ছেড়ে ৫০০ মাইলেরও বেশি দূরে নেপাল থেকে বাংলাদেশে আসার অধ্যায়টা সহজ ছিল না নেপালি শিক্ষার্থীদের।

নেপাল থেকে আগত ২০১৯-২০ বর্ষের এমনই এক শিক্ষার্থী ঐশ্বরিয়া জানান, খুলনায় ঈদের মুহূর্তগুলো যেনো এক হৃদয়ছোঁয়া ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। শহরটি প্রতি বছরই উৎসবের সাজে সেজে উঠে। ঈদকে কেন্দ্র করে আমার খুলনার স্থানীয় বন্ধুবান্ধব ও তাদের পরিবার আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়ে থাকে। এই দেশের পরিবারের সাথে মিশে যেয়ে আমি নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন বিরিয়ানি, সেমাই এবং বিভিন্ন মিষ্টান্ন উপভোগ করেছি। বিভিন্ন বাড়িতে যাওয়া এবং অতিথিপরায়ণতার সংস্কৃতি আমাকে এই সমাজেরই এক অংশ মনে করিয়েছে। আনন্দ, প্রার্থনা ও উদযাপন ঘিরে এই ঈদকে সত্যিই বিশেষ এবং আগের যেকোনো ঈদের তুলনায় ভিন্ন করে তুলেছে।

আরেক শিক্ষার্থী অনিল কুমার বলেন, ঈদ আসলে আমাদের ছুটির দিনের উপর নির্ভর করে ঈদ কেমন কাটবে। পরিবার ছেড়ে এখানে ছুটিতে থাকতে ভালো লাগে না। তাছাড়া বাংলাদেশি বন্ধু যারা আছে, তারাও বন্ধ পেয়ে নিজ নিজ বাসায় চলে যায়। ফলে হলগুলোতে শূন্যতা অনুভব হয়। গতকাল রাতে আমার মা ফোন করে কথা বলেছেন। তারাও আমাকে অনেক মিস করছেন।

একই বর্ষের শিক্ষার্থী নিরাজ বিস্ট বলেন, নেপাল যেতে না পারলে ঈদের বন্ধগুলো সাধারণ বন্ধের মতোই কাটে। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় এবারও নেপাল যাওয়া হচ্ছে না। তবে আমরা নেপালি শিক্ষার্থী যারা আছি, তাদের এই বন্ধে খুলনা শহরের আশেপাশে ঘোরার পরিকল্পনা রয়েছে।

আরেক নেপালি শিক্ষার্থী আদর্শ চৌধুরী জানান, ঈদের মুহূর্তগুলো খুবই উপভোগ্য। বাংলাদেশে পড়তে এসে এখানকার ভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারছি। সকলের ঈদ তাদের প্রিয়জনদের সাথে শুভ হোক।

এ বছর ২০২৪-২৫ সেশনে দুজন নেপালি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে সমৃদ্ধি ধাকাল বলেন, এবারই প্রথম ঈদের ছুটি আমি বাংলাদেশে উদযাপন করছি। সম্প্রতি খুলনায় ইফতার করার অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা সত্যিই অসাধারণ ছিল! মচমচে পিয়াজু, বেগুনি, সমুচা থেকে শুরু করে সুস্বাদু হালিম ও মজাদার বিরিয়ানি—বিভিন্ন রকমের খাবার ও সকলের আন্তরিক আতিথেয়তা ইফতারকে বিশেষায়িত করে তুলেছিল।

‘‘শরবত ও মিষ্টান্ন, বিশেষ করে ক্রিমি ফিরনি, ছিল স্বাদে অতুলনীয়। সর্বোপরি, খুলনার ইফতার ছিল একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা। ঈদের ছুটিও দারুণ কাটবে, সেই প্রত্যাশাই করছি।’’