ধর্ষণের ৪১ দিনের মাথায় দোষীকে ফাঁসির সাজা দিলেন আদালত

কলকাতার বড়তলা থানা এলাকায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ধর্ষণকাণ্ডে ৪১ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করে অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সাত মাসের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত রাজীব ঘোষালকে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আদালত দোষী সাব্যস্ত করে এবং মঙ্গলবার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে। বিচারক এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ হিসেবে চিহ্নিত করে দোষীকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেন।

গত বছরের ৩০ নভেম্বর বড়তলা থানা এলাকার ফুটপাতে শুয়ে কাঁদছিল সাত মাসের এক শিশু। ওই এলাকার এক বাসিন্দা দেখে পুলিশকে ফোন জানান। পরে শিশুটিকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা করতে গিয়ে দেখা যায় দুধের শিশুটির গোপনাঙ্গে একাধিক ক্ষতর চিহ্ন রয়েছে। এমনকী সারা শরীরেও একাধিক আঁচড়ের চিহ্নও রয়েছে।

তদন্তে জানা যায়, ওই দিনই শিশুটির বাবা-মা থানায় নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাদের ফুটপাতের বাসস্থান থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে শিশুটিকে পাওয়া যায়।

তদন্তে নেমে পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৩৭(২), ৬৫(২) এবং শিশু সুরক্ষা আইনের (পকসো) ৬ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করে। রাস্তার একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষন করে অভিযুক্ত রাজীব ঘোষালকে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে গেট প্যাটার্ন মেথড ও রাইট ব্লকার সিস্টেম ব্যবহার করে পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের তথ্য সংগ্রহ করে।

মাত্র ২৬ দিনের মাথায় পুলিশ চার্জশিট পেশ করে। এরপর দ্রুত বিচার পর্ব শেষ হয় এবং ৪১ দিনের মধ্যেই ব্যাঙ্কশাল আদালত দোষীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয়। বিচারক এই নৃশংস ঘটনাকে সমাজের জন্য ভয়াবহ বার্তা বলে উল্লেখ করেন এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

এদিন রায় ঘোষণার পর বড়তলা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, তদন্তে নেমে প্রথমে ১৯ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। দু-তিনদিন ধরে সেই ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। গেইট প্যাটার্ন এবং গুগল আর্থ ম্যাপিং ব্যবহার করে রাজীব ঘোষকে চিহ্নিত করা হয়। তারপর তার ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয় প্রায় সব থানায়। পরে ডিসেম্বরের শুরুতে একটি সূত্রে খোঁজ মেলে রাজীবের। এরপর ছদ্মবেশে ওত পাতে কলকাতা পুলিশ। ৪ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।