জনমত জরিপ

নতুন দলের প্রতীক দোয়াত-কলম, তলোয়ার, শাপলা ফুলের প্রস্তাব

বৈষম্যবিরোধী

নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের অংশ হিসেবে জনমত জরিপ চালাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি (জানাক) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। "আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ" শীর্ষক এই জরিপে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই অনলাইন কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে অনলাইনে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ফর্মপূরণ করেছেন, পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা ও থানায় এক লাখেরও বেশি ফর্ম জমা পড়ছে।

জানাকের মুখপাত্র সামান্তা শারমিন জানিয়েছেন, প্রচুর সংখ্যক ফর্ম ইতোমধ্যে জমা পড়েছে এবং প্রতিদিন নতুন তথ্য আসছে। বর্তমানে এই তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের কাজ চলছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা নতুন দলের নাম ও প্রতীকের বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। দলের নামের ক্ষেত্রে "জাস্টিস," "নাগরিক" এবং "বৈষম্যবিরোধী" শব্দগুলোর প্রতি বিপুল সংখ্যক মানুষের সমর্থন রয়েছে। প্রতীকের ক্ষেত্রে "দোয়াত-কলম," "তলোয়ার" এবং "শাপলা ফুল" সবচেয়ে বেশি প্রস্তাবিত হয়েছে।

সামান্তা শারমিন বলেন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নতুন দলের জন্য নানান নাম প্রস্তাব করেছেন, যার মধ্যে কিছু সাধারণ মূলভাব স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। তবে দলের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বেশিরভাগ মানুষ চান, নতুন দলের নামের মধ্যে ন্যায়বিচার, নাগরিক অধিকার ও বৈষম্যবিরোধী চেতনার প্রতিফলন থাকুক। জনমতের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২০২৪ সালের ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে, যা পরে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আন্দোলন পরিচালনার জন্য ৮ জুলাই গঠিত ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম ৩ আগস্ট ১৫৮ সদস্যে উন্নীত হয়। এরপর ২২ অক্টোবর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তখনই আন্দোলনের নেতারা জানান, তাদের কার্যক্রম এখানেই থামবে না; বরং দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করা হবে।

এই লক্ষ্য নিয়েই গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটি (জানাক) আত্মপ্রকাশ করে, যা ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ৩০০ থানায় কমিটি গঠন করেছে। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছে এই সংগঠন, যা জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির রূপরেখা নির্ধারণে কাজ করছে।