নারী ফুটবলার ও কোচের দ্বন্দ্ব, সমাধান কবে হবে?
- ১০ জুলাই ২০২৫, ১৬:০৫
কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত দেশের নারী ফুটবল অঙ্গন। কোচ পিটার বাটলারের অধীনে খেলতে চান না সাবিনা খাতুনরা। অন্যদিকে ইংলিশ কোচও সাফ জানিয়েছেন, ‘হয় ওরা (বিদ্রোহী ফুটবলাররা) থাকবে, নয় তিনি।’ দুপক্ষের এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থানে দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে। তবে সেটা নিরসনে সাত সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ কমিটি গঠন করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে সেই বিশেষ কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বাফুফে দপ্তরে। সেই প্রতিবেদনে কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ফুটবলারদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। বাদ যাননি কোচ পিটার বাটলারও। ৫৮ বছর বয়সী এ কোচের বিরুদ্ধেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে বাফুফের বিশেষ কমিটি। তবে দুই পক্ষের এ দ্বন্দ্ব নিরসন কীভাবে হবে, সেটা নির্ভর করছে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের ওপর।
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসান বলেছেন, ‘নারী ফুটবলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সেটা নিরসনে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল। আমরা প্রায় প্রতিদিনই কাজ করেছি। সংশ্লিষ্ট পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। সেই বক্তব্যের আলোকে কিছু সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ এবং সমস্যার প্রতিকার দিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি সভাপতির দপ্তরে।’
গতকাল এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা খানেক আগে নারী ফুটবল দলের একুশে পদক পাওয়ার খবর আসে। প্রতিবেদন তৈরিতে সে খবর প্রভাবিত করেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরুল হাসান বলেছেন, ‘একুশে পদক প্রাপ্তি শুধু ফুটবল নয়, যেকোনো স্পোর্টসের জন্য বড় বিষয়। নারী ফুটবল দলের এই স্বীকৃতি ফুটবলের প্রতি আপামর জনগণের আগ্রহ আরও বাড়াবে। নারীরা সাফল্য এনে দিয়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই। সবচেয়ে বড় বিষয় ডিসিপ্লিন। সেখানে সাফল্য-ব্যর্থতা কোনো প্রভাবক হিসেবে কাজ করেনি।’
প্রতিবেদন তৈরিতে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন, ‘কমিটিতে যারা ছিলেন সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। আমরা নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে ফুটবলের বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করার চেষ্টা করেছি।’
বিশেষ কমিটি যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরের কাজটা এখন বাফুফে সভাপতির। কোচ ও ফুটবলারদের মধ্যকার এ দ্বন্দ্ব নিরসরে বর্তমান সভাপতি তাবিথ আউয়াল কীভাবে কাজ করবেন, সেটা নির্ভর করবে তার ওপরই। চাইলে তিনি একাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, আবার নির্বাহী সভা ডেকে সবার মতামতের ভিত্তিতেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান।
তার ভাষ্য, ‘যেহেতু আমরা সভাপতি বরাবর দিয়েছি। সভাপতি চাইলে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, আবার প্রয়োজনে নির্বাহী সভায় সবার মতামতও চাইতে পারেন। সব কিছুই নির্ভর করছে তার ওপর। আবার প্রয়োজনবোধে তিনি খেলোয়াড়দের সঙ্গেও একবার কথা বলতে পারেন।’
প্রায় তিন সপ্তাহ থেকে দেশের বাইরে থাকা বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল গত বুধবার দেশে ফিরলেও গতকাল বাফুফেতে আসেননি। সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইমরুল হাসান বলেছেন, ‘সভাপতির হাতেই যে প্রতিবেদন দিতে হবে বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। উনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অনেক কর্মসূচি থাকতে পারে। প্রতিবেদন পরে তিনি আপনাদের জানাবেন।’