ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় অপরাধে লঘু শাস্তি, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল © টিডিসি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক সমকামিতায় মিলিত হতে চাওয়া, ফলাফল টেম্পারিং, মানসিক নির্যাতন, নারী শিক্ষার্থীকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটানো ও ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি, কথার অবাধ্য হলে ইন্টারনাল পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া, ক্লাসে মেয়েদের জামা-কাপড় নিয়ে কটূক্তি ও তাদের গালাগাল করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ইনক্রিমেন্ট বাতিল ও বাধ্যতামূলক এক বছরের ছুটির শাস্তিকে প্রহসন আখ্যা দিয়ে শাস্তি প্রত্যাখ্যান করে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসি বাংলোর সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়৷

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘হাফিজের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘সমকামী শিক্ষক মানি না মানব না’; ‘হাফিজের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘প্রশাসনের প্রহসন, মানিনা মানব না’; ‘প্রশাসনের ভন্ডামি মানি না, মানব’; ‘শাস্তি না ছুটি, ছুটি ছুটি’; ‘সমকামির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘হাফিজ হটাও, ডিএস বাঁচাও’, ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আরও পড়ুন: দু’দফা মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি ইবির মেগা প্রকল্প, বাড়ল তৃতীয়বার

এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর হাফিজুল ইসলামের বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ২৭ দফা অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর ভিত্তিতে ৮ অক্টোবর ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটির তথ্যমতে অধিকাংশ অভিযোগের প্রমাণ পেলেও সেই শিক্ষক হাফিজুলকে এক বছরের ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আবারও বিক্ষোভের ডাক দেয় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা তদন্ত কমিটিকে সব অভিযোগের প্রমাণসহ উপস্থাপন করেন। তারা দীর্ঘ ছয় বছর ধরে শিক্ষক হাফিজের নির্যাতন সহ্য করে গেছেন। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা না করে শিক্ষক হাফিজুলের পক্ষে রায় দিয়েছে। সেই শিক্ষকের শাস্তি এক বছরের ছুটিকে তারা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল করছেন।

আরও পড়ুন: গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হাবিপ্রবির, থাকছে পোষ্য কোটা

শিক্ষার্থীদের দাবি, এত এত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়ে হাফিজকে আরও শাস্তি থেকে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি পূরণ না হলে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন আরও কঠোর করারও হুশিয়ার দেন তারা।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক কাজী মোস্তফা আরিফ বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটিতে পাঁচজন সদস্য ছিলাম। দুই মাসের মতো সময় নিয়ে প্রত্যেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য নিয়েছিলাম। সব সাক্ষ্য-প্রমাণ ও ডকুমেন্টসের ভিত্তিতে সব যাচাই-বাছাই করে আমরা প্রায় ১৭-১৮টি অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা পেয়েছিলাম। আমরা এগুলো উল্লেখ করেই শাস্তির সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। এখন প্রশাসন কোন প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আমি বলতে পারছি না।’