জানুয়ারিতে বাড়ি আসবে বলেছিল, এলো লাশ হয়ে—জবি শিক্ষার্থী শাম্মীর বাবা
- ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৬
‘বড় মেয়ে শাম্মী খুব মেধাবী ছিল। ওর স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার। কিন্তু সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে তার বাড়ি আসার কথা ছিল। বাড়ি সে ফিরল, তবে লাশ হয়ে। সবসময় উচ্ছ্বাস-আনন্দে মেতে থাকা মেয়েটা কেন এমন করল’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নিহত ছাত্রী সাবরিনা রহমান শাম্মীর বাবা জাহিদুর রহমান।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর পুরান ঢাকার কাঠেরপুলের তনুগঞ্জ লেনের একটি বাসা থেকে শাম্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার মৃত্যুতে শাম্মীর গ্রাম যশোরের চৌগাছার নারায়ণপুরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জাহিদুর রহমান যশোরের কেশবপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছিল শাম্মী। ওর স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। নিজে পড়তে না পারলেও সেই স্বপ্নটা দেখতে থাকে ছোট বোনকে ঘিরে। কয়েক মাস আগে ছোট বোনকে ঢাকার ফার্মগেট এলাকার একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি করে এবং পাশের একটি মেসে থাকার ব্যবস্থা করে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। সেখানে অংশ নেয় ওর ছোট বোন। এরপর তারা দুই বোন ঘোরাঘুরি করে ছোট বোনকে মেসে রেখে আসে। এদিন সন্ধ্যায় শাম্মী বাসায় ফেরে। তখন ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়। ও আমাকে কিছু টাকা দিতে বলে, আমি টাকা পাঠাই। শেষ কথা বলার সময়ও ওর কথাবার্তায় কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করিনি।’
শাম্মীর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘রবিবার ভোর ৫টায় ঘটনা শোনামাত্রই আমি সূত্রাপুর থানায় গিয়েছি। প্রাথমিক অবস্থায় জানতে পেরেছি বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আত্মহত্যার নেপথ্যের আসল ঘটনা জানার জন্য এবং কেউ যদি প্রকৃত অপরাধী হয়, তার বিচার নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ মরদেহ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। লাশ উদ্ধারের সময় তার বয়ফ্রেন্ড সানি উপস্থিত ছিল। তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, এমন একটি নোট শাম্মী রেখে যায়।’