হাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থী বাড়লেও বাসের সংখ্যা বাড়েনি, সংকট চরমে

হাবিপ্রবিতে বাস সংকট

নির্ধারিত আসনের চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী বোঝাই করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস। যা নিয়ে দিনাজপুর শহর থেকে ক্যাম্পাস যাতায়াতে বেশ ভোগান্তি হাতে হয় শিক্ষার্থীদের।

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে হাবিপ্রবি বাসস্ট্যান্ডে সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, পিক আওয়ারগুলোতে চাহিদার তুলনায় বাস একেবারে অপ্রতুল। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস চালক জানান, সিট সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী বাসে উঠলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এতে ঝুঁকি থাকে। চলন্ত গাড়ি ব্যালেন্স এবং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। তবুও একটু এদিক-সেদিক হলেই শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়তে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্যানুসারে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। পাশাপাশি কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকাগুলোতে। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য সচল বাস রয়েছে মাত্র ১০ টি। এছাড়াও ২ টি দ্বিতল বাস রয়েছে। ট্রিপ প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়কে গুনতে হয় প্রায় ২ হাজার টাকা।

বাস

ক্যাম্পাস চলাকালীন প্রতি টিপে সর্বোচ্চ ২-৩ টি বাস থাকে। এই স্বল্প পরিমাণ বাসে অধিকাংশ সময়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী বহন করতে হয়। দিনের শুরুতে, লাঞ্চ আওয়ারে এবং বিকেলে শিক্ষার্থীদের চাপ বেশি থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাবেদ মজুমদার বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় স্নাতকোত্তর সহ অনেকগুলো ব্যাচের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে। এই পরিস্থিতিতে বাসে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থী সংখ্যাও বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পেলেও বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের চাপ পড়ছে বাসগুলোর উপর। অনেকসময় দেখা যায় গাদাগাদি করে বাসে আসা যাওয়ার সময় শিক্ষার্থী ও চালকের মধ্যে বাকবিতণ্ডার মতো ঘটনা ঘটে। প্রশাসন এই সমস্যা নিরসনে সঠিক পদক্ষেপ নিবে বলে আমরা আশাবাদী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন এবং যন্ত্র মেরামত শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস হয় না। শিক্ষকদের মর্জি অনুযায়ী ক্লাস হয়। ফলে কোন সময় বাসে শিক্ষার্থীদের চাপ পড়বে তা আগে থেকে জানা সম্ভব নয়। তবে শিক্ষার্থীর চাপ বেশি থাকলে তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত বাস দেওয়ার নিয়ম আছে।

এ প্রসঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা কল রিসিভ করেন নি।

উল্লেখ্য, গতবছরের ১৭ই সেপ্টেম্বর থেকে করোনা পূর্ববর্তী বাস শিডিউল কার্যকর রয়েছে। এ সিডিউলে সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট পরিবহন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন ডে তে দৈনিক ২৬ টি সহ সপ্তাহে প্রতি শুক্রবারে ১টি এবং শনিবারে ২টি বিশেষ ট্রিপ রয়েছে।