ইউজিসির সঙ্গে বৈঠকের পর ক্লাসে ফিরলেন মেরিটাইমের শিক্ষার্থীরা
- ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৫:১৬
তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফিরেছেন বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। ইউজিসি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধির ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত জানান শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান ও অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. মহিবুল আহসান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে উপাচার্য রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী, ট্রেজারার কমোডর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কমোডর এম মাহফুজুর রহমান, এফএমবিএস অনুষদের ডিন কমোডর এম মামুনুর রশিদ ও প্রজেক্ট ডিরেক্টর কমডোর মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বৈঠকে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে তিন দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং অগ্রগতি জানানো হয়। দাবির মধ্যে নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ইতোমধ্যে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদে নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় এবং নাম করা হয় মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে। তৎক্ষণাৎ শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন এবং প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি নাম আসবে বলে সবার প্রত্যাশা।
দ্বিতীয় দাবি, সেমিস্টার ফি নিয়ে বৈঠকে দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়। ইউজিসি থেকে জানানো হয়, এ সেমিস্টার ফি স্ট্রাকচারে ইউজিসিরও বেশি কিছু করার নেই, অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতেই সবকিছু। বর্তমানে সরকার আর্থিক সংকটে চলছে, তাই অর্থ মন্ত্রণাল়য় নতুন বাজেট বরাদ্দ দিচ্ছে না। বৈঠকে জানানো হয় বিল্ডিং ভাড়া বাবদ একটা বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়, যা সেমিস্টার ফি বেশি থাকার বড় একটা কারণ।
পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি প্রতিনিধিদল সেমিস্টার ফি কমানোর বিষয়ে একমত পোষণ করেন। এ সময় জানানো হয় এই সেমিস্টার থেকেই হ্রাসকৃত ফি কার্যকর হবে এবং অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইউজিসি বৈঠক করে ফি নির্ধারণ করবে। শিক্ষার্থীরা যথাসময়েই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। সেমিস্টার ফি কমিয়ে কত হবে, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি বৈঠকে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয় মাথায় রেখে যুক্তিসংগতভাবে স্ট্রাকচার নির্ধারণ করার আহ্বান জানান।
তৃতীয় দাবি, স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজের অগ্রগতি বিষয়ে জানানো হয়। আগামী ২০২৬ সালের জুলাই মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলা জানান প্রজেক্ট ডিরেক্টর কমোডর মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।
বৈঠক শেষে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সিফাতুল্লাহ বৈঠকের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। এ সময় সব ধরনের শ্রেণি কার্যক্রম আবার শুরু করার আহ্বান জানানো হয়। আজ সকালে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আশা, তাদের প্রত্যাশিত সেমিস্টার ফি চলমান সেমিস্টার থেকেই কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন দাবিতে গত সেপ্টেম্বর থেকেই দফায় দফায় আন্দোলন ও বৈঠক করে আসছেন বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। গত ১৪ জানুয়ারি তিন দফা দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও লং মার্চ টু ইউজিসি কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। ১৪ জানুয়ারি থেকেই শিক্ষার্থীরা দাবি না মানা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন রাখলে গতকাল বৈঠকের পর আজ আবার ক্লাসে ফিরলেন শিক্ষার্থীরা।