চারুকলায় চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি, ব্যস্ত সময় শিল্পীদের

চারুকলায় চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি
চারুকলায় চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি

বাংলা নববর্ষকে (১৪৩১) স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলার শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছর বাংলা বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে মহাধুমধামে পালন করা হয় উৎসবটি। এবারের আয়োজনেও প্রধান ভূমিকা রাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। এবার দায়িত্বে রয়েছেন চারুকলার ২৫তম ব্যাচ। আয়োজনকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

চিত্রশিল্পীরা বলছেন, ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরই যশোরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলা বর্ষবরণে নানা আয়োজন করে থাকে। এবছরের প্রস্তুতিও আশাব্যঞ্জক। ঈদ উৎসবের পর পরই বর্ষবরণে অসাম্প্রদায়িকতাকে ফুটিয়ে তুলতে চান তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাতুড়ি পেরেকের অনবরত ঠক ঠক শব্দ, বিভিন্ন মাপে কাঠের কাটাকাটিতে তৈরি হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান মোটিফ। এবছর অন্তত তিনটি বড় মোটিফ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। বনরুই, বেজি ও গন্ধগোকুলের মিশ্রণে তৈরি একটি, হাতি, ও টেপা পুতুলের আদলে বাকি দুটি মোটিফ তৈরি হচ্ছে।  

এসময় একমনে টেপা পুতুলে ছোট ছোট বাঁশের টুকরো লাগাতে দেখা যায় মিস্ত্রি মজিবুর রহমানকে। গত ২৮ বছর ধরে চারুকলার এই কাজে তিনি জড়িত রয়েছেন বলে জানান। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে বলেও জানান তিনি।

পাখিঘর তৈরি করছিলেন সুকৃতি আদিত্য। তিনি প্রাচ্যকলা বিভাগের ২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, ঈদ মাঝখানে পড়ে যাওয়ায় সবাইকে একটু বেশি কাজ করতে হচ্ছে। কেননা ঈদের ছুটিতে অনেককেই পাওয়া যাবে না। আর এই আয়োজনের প্রস্তুতির কাজ ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে।

প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ও মাসব্যাপী চারুকলা ক্যাম্পেইন থেকে সংগ্রহ করা টাকা দিয়ে আয়োজন করা হয় উৎসবের। এবার গত ২১ মার্চ ‘আমরা তিমিরবিনাশী' প্রতিপাদ্যে ছবি এঁকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন শিল্পী অধ্যাপক হাশেম খান। চলবে শোভাযাত্রার আগ দিন পর্যন্ত।

মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, শোভাযাত্রার পূর্ব-মুহূর্ত পর্যন্ত শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলবে। রোজা আমাদের আয়োজনে বড় কোনও প্রভাব ফেলেনি, কেননা এর আগেও ছেলে-মেয়েরা রোজা রেখে কাজ করে গেছে।

তিনি বলেন, ঈদের ছুটি হওয়াতে হাতে থাকে মাত্র ৮ দিন, এই ৮ দিনের মধ্যে কীভাবে এত বড় কর্মযজ্ঞ শেষ করা সম্ভব হবে! তারপরেও ঢাকায় যেসব শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদেরকে নিয়েই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যেন এবারের শোভাযাত্রাও বড় পরিসরে করা যায়।