সড়ক দুর্ঘটনায় চোখ হারিয়ে আটমাস পর ক্লাসে রুবিনা
- ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪৪
২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট ইজিবাইকে চড়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন নবম শ্রেণির ছাত্রী রুবিনা আক্তার। এ সময় দ্রুতগামী একটি বাস তাদের বহন করা ইজিবাইকটিকে চাপা দেয়। এতে গুরুতর আহত হয় রুবিনাসহ ইজিবাইকের পাঁচ যাত্রী। পরে দু’জন মারা যায়।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর প্রাণে বেঁচে গেলেও জীবনের তরে অন্ধ হয়ে যায় রুবিনা। তার ডান হাত ও বাম পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকে বাঁচাতে সহায়-সম্বল বিক্রি করেন নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ধরগাঁও গ্রামের দিনমজুর বাবা রুবেল মিয়া।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুর্ঘটনার আট মাস পর বিদ্যালয়ে আসে রুবিনা। তবে এই আসাটা আগের মতো নয়। তার এবারের আসা চোখের নিভে যাওয়া আলোর প্রদীপ নিয়ে। বিদ্যালয়ে রুবিনার উপস্থিতিতে এক বিষাদময় পরিবেশ তৈরি হয়। তাকে পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে সহপাঠীরা। এ সময় সেও চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। কণ্ঠস্বর শুনে বান্ধবীদের নাম ধরে ডেকে চেনার চেষ্টা করে।
রুবিনা কেঁদে কেঁদে বলতে থাকে, ‘আল্লাহ আমারে তুমি এমন শাস্তি কেন দিলা? আমি কি আর তোদের দেখতে পারব না। আমি কি আর তোদের মতো লেখাপড়া করতে পারব না। তোরা সকলে মিলে আমার চোখের একটা ব্যবস্থা কর। আমি আবার পড়ালেখা করতে চাই।’
রুবিনার বাবা রুবেল মিয়া জানান, দুর্ঘটনায় দায়ী বাসের মালিক তাঁকে কোনো সহায়তা করেনি। স্থানীয়দের উদ্যোগে লাখ দেড়েক টাকার একটা ব্যবস্থা হয়েছিল, যা চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে গেছে। এখন টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার জোগাড় করতে পারছেন না।
চিকিৎসক বলেছেন বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারলে রুবিনা আবার দেখতে পারবে বলে জানান তার বাবা। কিন্তু তাঁর পক্ষে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করা কোনো দিনও সম্ভব নয়।