ঢাকা বোর্ডে ২১তম, ঢাবিতে ৫ম হওয়া হাবিবুল্লাহ বুয়েটে দ্বিতীয়

বোর্ডে ২১তম
বাবা-মার সঙ্গে হাবিবুল্লাহ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ খান মুন্না। এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে তিনি ২১তম হয়েছিলেন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে হয়েছিলেন ৫ম।

হাবিবুল্লাহ খান নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা শুনই ইউনিয়নের গোয়াতলা গ্রামের  আব্দুল আজিজ খানের নাতি এবং মো. আবদুল মান্নান খান ও হাবিবা সরকার দম্পতির একমাত্র সন্তান।তবে হাবিবুল্লাহর পরিবার রাজধানীর পল্লবী এলাকায় বসবাস করেন। বাবা আবদুল মান্নান খান আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। আর মা স্নাতকোত্তর করা হাবিবা সরকার সংসার সামলান।

নিজের সফলতার সূত্রের কথা বলতে গিয়ে হাবিবুল্লাহ খান বলেন, ‘একটি কথা আছে, পরিশ্রম করলে অবশ্যই ভালো ফল পাওয়া যায়। আমার ক্ষেত্রে এ কথাটিই প্রযোজ্য। এ ছাড়া আমার ওপর সৃষ্টিকর্তার রহমত ছিল। সেজন্য এমন ফলাফল করতে পেরেছি। পরিশ্রম ও নিজের প্রতি সৎ হলে সব কাজই সহজ হয় বলে তাঁর ধারণা।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুল্লাহ শহীদ বীর উত্তম লেফটেন্যান্ট আনোয়ার গার্লস কলেজে নার্সারিতে ভর্তি হয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। সেখান থেকে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে ভর্তি হয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি ঢাকা বোর্ডে ২১তম হন। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা থেকে এইচএসসি—সব পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পেয়ে বৃত্তি লাভ করেন হাবিবুল্লাহ।

হাবিবুল্লাহর বাবা আবদুল মান্নান খান বলেন, হাবিবুল্লাহর মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে যেন বুয়েটে মেধাতালিকায় স্থান পায়। ছেলে তার নিজের স্বাধীনতা মতোই লেখাপড়া করুক। মায়ের স্বপ্নই পূরণ হতে যাচ্ছে। বুয়েটে ছাড়াও হাবিবুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) ভর্তি পরীক্ষায় পঞ্চম হয়েছেন। সেখানে ভর্তিও হয়েছেন। এ ছাড়া নেত্রকোনা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) ভর্তি পরীক্ষায় পঞ্চম ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি) ৩২তম হয়েছেন।

আবদুল মান্নান খান আরো বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই হাবিবুল্লাহ ভালো ছাত্র। তাই আমি তাকে পড়ালেখায় কোনো চাপ দেইনি। আমি ও তার মা চাই, আমাদের ছেলে যেন একজন সংবেদনশীল ভালো মানুষ হোক। আর যে পেশায় থাকুক, সে যেন দেশের সেবা করে। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে।’

হাবিবুল্লাহর মা হাবিবা সরকার বলেন,‘বুয়েট বা মেডিকেলে চান্স পেতে হলে প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়, তাই সব সময় ছেলের পাশে থেকে তাকে লেখাপড়া করতে উদ্বুদ্ধ করেছি। আল্লাহ আমার কথা শুনেছেন। মনে হচ্ছে, আমার স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। ছেলের সাফল্যে আমরা দারুণ খুশি।’