সরকারিভাবে মডেল মসজিদ নির্মাণ সংবিধান পরিপন্থী: শাহরিয়ার কবির

শাহরিয়ার কবির

সারাদেশে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে মডেল মসজিদ নির্মাণ সংবিধানের পরিপন্থী দাবি করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে একমাত্র নির্মূল কমিটি প্রতিবাদ করেছে। বাংলাদেশের কোনো সংগঠনের কোনো সাহস হয়নি এ প্রসঙ্গ তোলার। ৫৬০টি মডেল মসজিদ বানাচ্ছে সরকার, কাদের টাকা দিয়ে? আমাদের জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এগুলো বানানো হচ্ছে। 

বুধবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি হল রুমে মহান স্বাধীনতার মাস মার্চে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, এটা সংবিধান পরিপন্থী আমরা বলেছি। সংবিধানের ৭ এর ক ধারায় পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে- রাষ্ট্র কোনো বিশেষ ধর্মকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে না। আপনি যদি ৫৬০টা মডেল মসজিদ বানান, কেন আপনি ৫৬টা মন্দির প্যাগোডা গির্জা বানাবেন না। আর তাই যদি করতে হয় তাহলে সমস্ত অর্থ সেখানে আপনি ব্যয় করুন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন,  যে দল সরকারে আছে সেই দলই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে দিয়েছিল। এখন এই সরকারে অনেক মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী লোক ঢুকে পড়েছে। শুধু রাজনৈতিকভাবেই নয়, প্রশাসনে, বিচার বিভাগে, পুলিশে সব জায়গায় কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা জেঁকে বসেছে। তাদের মুখোশ উন্মোচন না করে তারা এই সরকারকে প্রভাবিত করছে। এটি কিন্তু বাস্তব সত্য, যার জন্য মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা সেই দিকে দেশ এগোচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, এখন দল ভারি করার জন্য জামায়াত-বিএনপি-শিবির এদের নিলে দলের যে বৈশিষ্ট্য সেটি আর থাকবে না। যারা জামায়াত-শিবির-বিএনপির লোকজন আওয়ামী লীগে ঢোকার চেষ্টা করছে তাদের একটাই উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগে ঢুকে আওয়ামী লীগের লোকদের যদি জামাতি ভাব ধারায়, জামাতি আদর্শে পরিণত করা যায়। সেই দিকে তারা এগোচ্ছে কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সেদিকে খেয়াল করছে না। তারা ভাবছে যে দলকে ভারি করাই বেশি প্রয়োজন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো আফজাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. মফিজুল ইসলাম মান্টু প্রমুখ। সভায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।