রাঙ্গুনিয়ার চা-বাগানের কথা হয়তো অনেকেরই অজানা

রাঙ্গুনিয়ার চা-বাগান
রাঙ্গুনিয়ার চা-বাগান

চায়ের রাজ্য বলতে আমরা শুধু  সিলেটের শ্রীমঙ্গলের কথাই বুঝি। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম ও অন্যতম চা-বাগান আছে চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়ায়— তা হয়তো অনেকেরই অজানা।

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সফরভাটা গোডাউন বাজার ধরে সোজা ১০ কিলোমিটার দক্ষিণাংশে কোদালা ইউনিয়নে লুসাই কন্যা কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে সবুজ পাহাড় আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর রাঙ্গুনিয়া কোদালা এ চা-বাগানের দেখা মিলবে।

সকালে কিংবা বিকেলের নাস্তার সাথে চা পান করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। চা উৎপাদনের কথা আসলেই প্রথমে যে জিনিসটার কথা আসে তা হলো চা বাগান। চায়ের এ বাগান মানেই অ্যাডভেঞ্চার বা রোমাঞ্চ।

No photo description available.

রাঙ্গুনিয়ার কোদালা চা-বাগান ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পর্যটকদের কাছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসু মানুষ প্রতিদিন ছুটে আসছে এই চা বাগানে। সারি সারি উঁচু-নিচু পাহাড়ের গা ঘেঁষে লাগানো আছে সব চায়ের গাছ। যেদিকে চোখ যায় শুধুই সবুজ। সেইসাথে চা শ্রমিকদের কর্মতৎপরতা, পাখির কিচিরমিচির শব্দ, ব্রিটিশ বাংলো,সবুজ বনায়ন আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে।

বর্ষায় ঝিরি বৃষ্টির দিনে চা-বাগান যেন হয়ে ওঠে আরও সবুজ। এসময় চা বাগান দেখতে আরও নান্দনিক লাগে। এ শীতের ঋতুতেও চা-বাগানে প্রতিদিন দর্শনার্থীদের আনাগোনা চোখের পড়ার মতো। বর্তমানে ফটোগ্রাফি, প্রি ওয়েডিং ও পোস্ট ওয়েডিং শ্যুটের জন্যও দিন দিন মানুষের পছন্দের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে এই চা বাগান।

কোদালা চা বাগান প্রতিষ্ঠা পায় ১৮৯৪ সালে। জানা যায়, ব্রিটিশরা কর্ণফুলী নদী দিয়ে আসা যাওয়ার সময় কোদালা চা বাগানের বিস্তীর্ণ জায়গা দেখে চা বাগান করার উদ্যোগ নেয়। পাহাড় বেষ্টিত ঘন সবুজে ঘেরা ৪২০০ একর জায়গা জুড়ে কোদালা চা বাগান অবস্থিত।

কোদালা চা বাগানের মধ্যে কিছু জায়গা জুড়ে রাবার বাগান রয়েছে। এই চা বাগানের বিশেষত্ব হচ্ছে এখানে রয়েছে একটি কৃত্রিম লেক। একইসাথে পর্যটকরা দেখতে পাবে চা ও রাবার প্রক্রিয়াকরণ কারখানা। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বমোট ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে গুণে-মানে ও আয়ে কোদালা চা বাগানের অবস্থান তৃতীয়। বর্তমানে সিটি গ্রুপের মালিকানায় চা-বাগানটি পরিচালিত হচ্ছে।

May be an image of grass

চট্টগ্রাম শহরের কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে লোকাল কিংবা রিজার্ভ সিএনজি চলিত ট্যাক্সি করে কোদালা চা বাগান যাওয়া যায়। তবে লোকাল সিএনজিযোগে গেলে রাঙ্গুনিয়ার সফরভাটা গোডাউন বাজার নেমে আবার সিএনজি চলিত ট্যাক্সি করে পোঁছাতে  হবে চা বাগানের গেটে।

এছাড়া চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত বোট ভাড়া করে নদীপথেও চা বাগানে যাওয়া সুযোগ রয়েছে। যারা সময়ের অভাবে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ঘুরে আসতে পারছেন না। চা বাগান প্রিয় সেসব মানুষ খুব সহজেই চট্টগ্রামের এই নৈসর্গিক চা-বাগান দেখে আসতে পারেন।