শিশুদের পদচারণায় মুখর গ্রন্থমেলা, আগ্রহ বেশি রূপকথার বইয়ে

স্টলে স্টলে ঘুরে নিজেদের পছন্দের বই কিনছেন শিশুরা
স্টলে স্টলে ঘুরে নিজেদের পছন্দের বই কিনছেন শিশুরা

অমর একুশে বই মেলার নবম দিন আজ। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় বইমেলায় লোকসমাগম বেশি অন্যদিনের তুলনায়। প্রতিদিনের মত আজও জমজমাট বইমেলা। এদিন বড়দের পাশাপাশি ভিড় দেখা গেছে শিশুদেরও। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই ছিল শিশুপ্রহর। ফলে অন্যান্য দিনে তুলনায় বেশি উপস্থিতি ক্ষুদে শিক্ষার্থী ও পাঠকদের।

শুক্রবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) শিশুমেলা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শিশুরা তাদের বাবা মায়ের সাথে বই মেলায় এসেছে এবং আনন্দের সাথে বই কিনছে। শিশুদের কেনা বইয়ের মধ্যে বিভিন্ন ছবিযুক্ত বই, রূপকথা, ভূতের গল্পসহ বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রয়কর্মীরা।

মেলার একাধিক বিক্রয়কর্মী জানিয়েছেন, শুক্রবার হওয়ায় গত কয়েকদিনের তুলনায় আজকে বিক্রি অনেক বেশি। অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে মেলায় আসছেন এবং বিভিন্ন ধরনের বই কিনছেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নিষিদ্ধ বা বাজেয়াপ্ত হয়েছিল যেসব বই

বাবা মায়ের হাত ধরে এদিন মেলায় এসেছেন আজওয়া আরাদা। তিনি কথা বলেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে। জানিয়েছেন মেলায় অনেক বই দেখে তার উচ্ছ্বাসের কথা। ক্ষুদে এ পাঠক বলেছেন, ‘আমি কয়েকটি বই কিনেছি। তার মধ্যে হাসির গল্প আছে এবং ভূতের কাহিনি আছে।’

‘‘আজওয়া আরাদা রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করে। রাক্ষস-রাক্ষুসী, ভূতের গল্প, পাশাপাশি হাসির যে গল্পগুলো সেগুলো পছন্দ করে।’’—যুক্ত করেন তার বাবা।

শিশুরা মেলায় থেকে কেমন বই কিনছেন এবং পছন্দ করছেন—এমন প্রশ্নে প্রগতি প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী তামান্না জানিয়েছেন, আমাদের এখানে রূপকথার বইয়ের পাশাপাশি ভূতের গল্প এবং আকর্ষণীয় ছবির বই পছন্দ করছে শিশুরা। ছবির বইয়ের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কাল্পনিক ও বাস্তব চরিত্রের ছবি। পাশাপাশি রয়েছে ড্রাগনের কাল্পনিক ছবি, ডাইনোসরের ছবি। অল্পবয়সী শিশুরা এই বইগুলোই বেশি পছন্দ করছে।

বাবুই প্রকাশনীর মালিক কাদের বাবু বলেন, এবারের বই মেলায় আজকেই সবচেয়ে বেশি বাচ্চারা এসেছে এবং প্রচুর বইও বিক্রি হচ্ছে। এবার আমাদের প্রকাশনী থেকে সায়েন্সফিকশন, রূপকথা ও ভুতের গল্প এবং ধরনের বই সবচেয়ে বেশি বিক্রয় হচ্ছে। ভূতের গল্পের প্রতি শিশুদের আগ্রহ এখনও বেশি বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: দর্শনার্থীদের দুয়োধ্বনিতে বইমেলা থেকে বিতাড়িত মুশতাক-তিশা

চিরন্তন প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী শুভ জানান, আমাদের এখানে খুব ভালো বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার হওয়াতে অনেক শিশুরা তাদের বাবা মায়ের সাথে এসেছে। আমাদের এখানে শিশুরা মূলত যারা একদমই ছোট তারা বিভিন্ন ছবির বই কিনছে। যারা একটু বড় তারা বিভিন্ন ধরনের গল্পের বই কিনছে। এ বছর ভুতের গল্প বেশি বিক্রি হচ্ছে।

বাবুই প্রকাশনীর লেখক খান মোহাম্মদ রুবেল বলেন, শিশুরা এখনও রূপকথা, ভূতের গল্প, মজার কৌতুক জাতীয় গল্পই পছন্দ করছে। পাশাপাশি শিশুদের জন্য বই লিখতে হলে খেয়াল রাখতে শিশুসুলভ ভাষা এবং শব্দ। 

তিনি কোন বিষয়গুলো মাথায় রেখে বই লেখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মূলত চাই শিশুরা দেশ সম্পর্কে জানুক। দেশের বিভিন্ন জিনিস, ইতিহাস যেন তারা মজায় মজায় শিখতে পারে। আমি চেষ্টা করছি সেভাবে লেখার। আমার কয়েকটি বই এরই মধ্যে ভালো বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি একটা নতুন বই বাজারে আসবে সামনে।