ইকবালের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চান পুরান ঢাকার ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা

মানববন্ধনে বিভিন্ন ক্যাম্পাসের গণমাধ্যমকর্মীরা
মানববন্ধনে বিভিন্ন ক্যাম্পাসের গণমাধ্যমকর্মীরা

সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে আইনবহির্ভূত বহিষ্কার প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন পুরান ঢাকার ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা। 

মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক প্রাঙ্গণে ১ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত তিন ক্যাম্পাসের সংবাদকর্মীরা। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা।

এসময় কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির (কনকসাস) সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক আতিক হাসান শুভ বলেন, মনোয়ার ইকবাল দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে তার লেখনীর মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা ও অনিয়মের সংবাদ তুলে ধরেছে। 

সম্প্রতি ‘দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নতি হচ্ছে’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন ইকবাল করেছে সেখানে যদি কোন অসংগতি থেকে থাকে তাহলে কুবি উপাচার্যের উচিত ছিল প্রতিবাদলিপি দেওয়া। এভাবে হুট করে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে একজন শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি বহিষ্কারাদেশ দেওয়া সুস্পষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার—বলেন কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।

মানববন্ধনে বিভিন্ন ক্যাম্পাসের গণমাধ্যমকর্মীরা

আমরা উপাচার্যের সেদিনের বক্তব্য অডিওতে স্পষ্ট শুনতে পেয়েছি দুর্নীতি নিয়ে যে বক্তব্য উনি দিয়েছেন প্রতিবেদনে তাই তুলে ধরা হয়েছে। সেই হিসেবে বলা যায়, এই বহিষ্কারাদেশের মাধ্যমে উপাচার্যের একান্ত ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আমি উপাচার্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বলতে চাই, অবিলম্বে ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসে তার স্বাভাবিক অবস্থান ফিরিয়ে দেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে যদি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে আমরা সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দিব। এছাড়াও ক্যাম্পাসে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য স্বাধীন ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতেরও জোর দাবি জানান তিনি।

এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব অপূর্ব চৌধুরী বলেন, একজন উপাচার্য হবেন আন্তরিক, সহানুভূতিশীল ও কথা বার্তায় মার্জিত। তিনি কখনো দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গাইতে পারেন না। আর সেটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে কাউকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বহিষ্কারও করতে পারেনা। উপাচার্যের কর্মকাণ্ডে তার অক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে। অনতিবিলম্বে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় আমরা ধারাবাহিকভাবে আরও কঠিন কর্মসূচি দিব বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ৩১শে জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।