বাংলাদেশের একমাত্র ও প্রথম জলহস্তীর কংকাল তৈরি পবিপ্রবিতে

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) তৈরি হয়েছে দেশের প্রথম ও একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জলহস্তী কংকাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যানিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের গবেষকেরা এই জলহস্তী কংকালটি শিক্ষা ও গবেষণা সহায়তার জন্য তৈরি করেন।

বর্তমানে জলহস্তী কংকালটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের ল্যাবরেটরি সংরক্ষিত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের পৃষ্ঠপোষকতায়, এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতায় কংকালটি প্রস্তুত করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে দীর্ঘ ১১ মাসব্যাপী পরিশ্রমের মাধ্যমে কংকালটি পাঠদানের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। যা বাংলাদেশে তৈরি প্রথম ও একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জলহস্তী কংকাল। কংকালটি পবিপ্রবির পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারিয়ানদের জ্ঞান অর্জনের এক অমূল্য ভান্ডার হিসেবে দৃশ্যমান।

বাংলাদেশ সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট লাইভস্টক সেক্টর গড়ার স্বপ্ন দেখা এই প্রতিভাবান তরুণগণ জলহস্তীর কংকাল তৈরির পাশাপাশি মেছো বাঘের কংকাল, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কংকাল ও কচ্ছপের কংকাল তৈরির কাজ চলমান রেখেছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে আদরের পোষাপ্রাণির কংকাল তৈরিতেও তারা ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে।

এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, রংপুর চিড়িয়াখানায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে লিওন নামের জলহস্তীটি। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সংবাদ পাওয়ার পরপরই উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত একান্ত সহযোগিতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক আব্দুল জব্বারের অনুমতিক্রমে সে বছর সেপ্টেম্বর মাসে জলহস্তীর কংকালটি রংপুর চিড়িখানা হতে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আনা হয়। 

তিনি আরও বলেন, বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সে কংকাল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেখানে প্রাণির দৈহিক গঠন, উৎপত্তি, বয়স, লিঙ্গ নির্ধারণ, বিভিন্ন রোগ ও রোগে মৃত্যুর কারণ, প্রজাতির ভিন্নতাসহ নানাবিদ এনাটমিক্যাল ও এনথ্রোপোলজিক্যাল বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

এ বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, এ ধরণের কাজ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে কাজে লাগে এমন গবেষণার কাজে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু জলহস্তী কংকাল নয়। আরও কয়েকটা প্রাণির কংকাল সংরক্ষণে কাজ করছে এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগ।