নোবিপ্রবির ময়নাদ্বীপে পাখির জন্য মাটির হাড়ি স্থাপন

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
নোবিপ্রবির ময়নাদ্বীপ সংলগ্ন শান্তিনিকেতনে পাখির নিরাপদ আবাসস্থল করতে গাছে গাছে মাটির হাড়ি স্থাপন করা হয়েছে।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়নাদ্বীপ সংলগ্ন শান্তিনিকেতনে পাখির অবাধ বিচরণ ও নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করতে গাছে গাছে মাটির হাড়ি স্থাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকেলে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, দেশীয় পাখিরা অসহায়। ঝড় বৃষ্টি হলে তাদের আবাসস্থল উড়ে যায়। ফলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে যায়। জীববৈচিত্র্য ভালো থাকলে আমাদের পরিবেশ ভালো থাকবে এবং আমরাও ভালো থাকবো। পাখিদের কিচিরমিচিরে সবার মন ভরে যায়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি পাখির কিচিরমিচির শুনতে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন ও ছুটে আসেন।

তিনি আরও বলেন, এই হাড়িগুলো স্থাপনের মাধ্যমে দেশীয় পাখিরা নিরাপদ আবাসস্থল পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের প্রতি অনুরোধ যেনো পাখিরা নিরাপদ থাকতে পারে। তাছাড়া আমরা এই এলাকা অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন নোবিপ্রবি থিয়েটার দেশীয় পাখি সংরক্ষণ ও নিরাপদ আবাসস্থল তৈরিতে যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সেটিও অনন্য উদ্যোগ।

এসময় অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, নোবিপ্রবি থিয়েটারের উপদেষ্টা ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাহানা রহমান, আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বাদশা মিয়া, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সালাম, নোবিপ্রবি থিয়েটারের সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: চলন্ত লিফটে আটকে পড়েছেন নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

অপরদিকে পাখিদের অস্তিত্ব রক্ষা ও নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তুলতেই নোবিপ্রবি থিয়েটার ক্লাবের পক্ষ থেকে গাছে গাছে এসব হাঁড়ি বসানো হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, সন্ধ্যা হলেই নীড়ে ফেরা পাখিদের নিরাপদ বাসার ব্যবস্থা করার জন্যই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়নাদ্বীপ সংলগ্ন শান্তিনিকেতনসহ পুরো ক্যাম্পাসের  সবুজ শ্যামল পরিবেশকেই পাখিরা তাদের আবাসস্থল হিসেবে বেছে নেয়। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই পাখির বন্ধু।

নোবিপ্রবি থিয়েটারের প্রধান উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির পরিচালক অনুজীব বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি পাখি আসে এবং সেই অতিথি পাখি নিয়েই অভয়ারণ্যে তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে আমরা থিয়েটারের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে গাছে গাছে হাড়ি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। কেননা দেশীয় পাখি সংরক্ষণ করা আমাদের খুব প্রয়োজন। প্রকৃতিকে আমরা সুন্দর করে দেখতে চাই। যেকোনো মূল্যে আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবো।

নোবিপ্রবি থিয়েটারের সভাপতি হাসিব আল আমিন বলেন, মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে পরিবেশের ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রাথমিক ভাবে আমরা ৫০টি মাটির হাড়ি স্থাপনের মাধ্যমে কাজটির সূচনা করেছি। আমরা চাই পাখিরা নিরাপদ থাকুক এবং আমাদের প্রকৃতি ভাল থাকুক। আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।