যষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণিতে তিন বা দু’ঘণ্টার পরীক্ষা হবে না

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান
এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান

নতুন কারিকুলামের আলোকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোনও পরীক্ষা বা মডেল টেস্ট হবে না। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নির্দেশনার আলোকে চলবে মূল্যায়ন। এ বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে আলাপকালে বিস্তারিত জানিয়েছেন এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম টি রহমান

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, স্কুলে কিন্তু ধারাবাহিক মূল্যায়ন চলছেই। ছয়মাস পরে এর ৬০ শতাংশ থাকবে। সেইসঙ্গে তখন আরেকটা পরীক্ষা থাকবে। তবে সেটা আগের মতো তিন বা দুই ঘণ্টার পরীক্ষা না। সেটাও অনেকটা প্রয়োগিক বা প্র্যাকটিক্যাল টাইপের। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক কারিকুলাম। কাকে বলে, কত প্রকার কি কি? এ জাতীয় নয়।

নতুন পরীক্ষার ধরনের বিষয়ে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, যেটি জানে সেটা করতে পারে কি-না, তা যাচাই করা হবে। যেমন- কেমন করে সাতার কাটে সেটা বইতে লিখে দেওয়া হলো। কিন্তু আসলে সাতার পারে কি-না, সেটার প্রমাণ পাওয়া যাবে না। সাতার কাটলেই জানা যাবে যে, সাতার পারে কি-না।

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান আরো বলেন, কাজটা দক্ষতার সঙ্গে করতে পারছে কি-না, সে যোগ্যতা আছে কি-না, সেটি জানা। এটা করতে গেলে আসলে তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় বোঝা যাবে না। সে জন্য এভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম আসায় এখন এ পদ্ধতি শুরু হয়েছে।

অন্যান্য শ্রেণির মূল্যায়নের বিষয়ে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, আগামী বছর অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম আসলে সেখানেও এভাবে মূল্যায়ন হবে। এভাবে মূল্যায়নের আলোকেই ক্লাসরোলও নির্ধারণ হবে।

নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র থাকবে না, এটা আসলে নতুন করে বলা না। কিন্তু অনেকেই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য নোটিশ দিচ্ছে। এ কারণে মাউশি থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শব্দটার দীর্ঘদিনের চর্চার কারণে এমন ধারণা জন্মেছে যে, একটি নির্দিষ্ট দিনে দুই বা তিন ঘণ্টা নির্দিষ্ট সময়ে লিখে উত্তরপত্র জমা দেবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ধারাবাহিক মূল্যায়নের কথা বলেছি শুরু থেকেই। এর মানে হলো শিক্ষার্থীরা সব সময় কোনও না কোনও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর কিছু এভিডেন্স তৈরি হচ্ছে। তার ভিত্তিতে মূল্যায়নটা হচ্ছে।

শিক্ষকদের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, বইয়ের মধ্যেই মূল্যায়ন ছক দেওয়া আছে। অন্য জায়গায়ও দেওয়া আছে। শিক্ষকেরা সেটি অনুসরণ করে শিক্ষকেরা মূল্যায়ন করে যাচ্ছে। তবে কথা বলা হচ্ছে, পরীক্ষাটা তো হচ্ছে না। আসলে শিক্ষকেরা প্রতিনিয়ত পরীক্ষা নিচ্ছেন।

নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান আরও বলেন, ছয় মাস পরপর মূল্যায়ন আছে। ছয় মাসে একটা ও ১২ মাসে একটা মূল্যায়ন হবে। এর সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়ন আছে। আগে ক্লাস টেস্ট বা মান্থলি টেস্ট হতো। সেগুলো যখন হয়েছে তখনি শেষ হয়ে গেছে। তারপর এটা ড্রপ হয়ে গেছে। এখন আর সেটা হবে না।