টেকনাফে চবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
- ২১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৫
টেকনাফে বে ক্রুজ-১ জাহাজে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের লাইসেন্স আজীবনের জন্য বাতিলসহ চার দফা দাবিতে অবস্থান করেন তারা।
বুধবার (১৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বর এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় তারা ৪ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হল: এই ঘটনার সাথে জড়িত জাহাজেট স্টাফ সন্ত্রাস বাহিনীকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে, বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের লাইসেন্স আজীবনের জন্য বাতিল করতে হবে, বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের মিথ্যা ও বানোয়াট স্টেটমেন্ট প্রত্যাহার পূর্বক লিখিত মুসলেকা দিয়া নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং জাহাজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জান-মালের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
মানববন্ধনে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মোসাদ্দেকের সঞ্চালনায় সুমাইয়া রাজা রূহানী বলেন, ওখানে আমাদের কোনও ভুল ছিল না।আমরা চেয়েছিলাম আমাদের বুকিং দেওয়া সিটে আমাদের সবাই না বসলেও অন্তত যাদের খুব বেশি প্রয়োজন ছিল তাদেরকে সিটে বসাতে। সেখানে আমাদের উপর বে ক্রুজ-১ জাহাজের স্টাফ ও স্থানীয় লোকজন মিলে দুই দফায় হামলা করা হয়। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কেন দেশের কোনো নাগরিকই এ ধরনের ঘটনা আশা করে না।
মোসাদ্দেকুল ইসলাম বলেন, আমাদের উপর যে হামলা করা হয়েছে সেটা অবশ্যই পরিকল্পিত। আমাদের উপর যখন জাহাজের স্টাফ এবং স্থানীয়রা হামলা চালাচ্ছিলেন তখন বিজিবিসহ প্রশাসনের অন্যান্য লোকেরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তারা কোনওভাবেই মারধরকারীদের আটকানোর চেষ্টা করেন নি। তারা সেখানে উলটো তামাশা দেখছিলেন।
আরও পড়ুন: তথ্য সংগ্রহের সময় লাঞ্ছিত হল প্রভোস্ট, কার্যালয় ভাংচুর ছাত্রলীগের
টেকনাফে মারধরের শিকার হওয়া অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ আফতাব হোনেন বলেন, আমরা সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলাম। ঝামেলা তৈরি হওয়ার পরও আমরা চাচ্ছিলাম যে ঠান্ডা মাথা সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথাতে কর্ণপাত করে নি। এটা শুধুমাত্র আমাদের উপর হামলা নয়। এটা মূলত দেশের স্বাধীনতা যে মূল্যবোধ তার উপরে হামলা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশ ও প্রশাসনের যে নিরব ভূমিকা ছিল তা আসলেই আমাকে শঙ্কিত করেছে। তারা কেন এমন আচরণ করেছে তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। বে ক্রুজ-১ জাহাজের সকল স্টাফকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ওই জাহাজের সব ধরণের লাইসেন্স বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।
অধ্যাপক ড. আবুল হোসাইন বলেন, আজকে আমরা বিভাগের অভ্যন্তরীণ কমিটির মিটিংয়ে দুইটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি হল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা ও আরেকটি হল হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা। আসলে যতই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক না কেন, ছাত্রছাত্রীদের হৃদয়ে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে তা কোনওভাবে পূরণ করার মত নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ ঘটনায় বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ ঘটনার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।