মাইগ্রেনে থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়, স্বস্তি এনে দেবে যেসব খাবার

টিপস
মাইগ্রেনে থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

মাইগ্রেন দীর্ঘস্থায়ী ও অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কম থেকে বেশি সব রকমই হতে পারে। উজ্জ্বল আলো, নির্দিষ্ট গন্ধ বা তীব্র আওয়াজের ফলে ব্যথা শুরু হতে পারে। এই অস্বস্তি মাথার এক ধার থেকে শুরু হতে পারে এবং দুই থেকে তিনদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের এই ব্যথা অন্যদের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। 

বরফের টুকরো
মাথা ব্যথা বেশি হলে একটি প্লাস্টিকে কিছু বরফের টুকরো নিয়ে মাথায় ব্যথার জায়গায় দিয়ে রাখতে পারেন। এতে মাথা ব্যথা কম হবে। 

ভিটামিন বি-২ 
ভিটামিন বি-২ এর পরিমাণ শরীরে বাড়লে মাইগ্রেনের ব্যথা কম হয়। মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত খাদ্য, চিজ, বাদামে ভিটামিন বি-২ এর পরিমান বেশি মাত্রায় থাকে।

মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়

গোলমরিচ
মাইগ্রেন থেকে রক্ষা পেতে গোলমরিচের বিকল্প নেই। এক কাপ গরম জলে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। সঙ্গে মধু আর লেবু মিশিয়ে নিতে পারেন।

মাইগ্রেনে মুক্তি দেবে খাঁটি ঘি
আয়ুর্বেদ অনুসারে, "শরীর ও মনে অতিরিক্ত পিত্তের ভারসাম্য বজায় রাখতে ঘি ছাড়া আর কিছুই ভালো কাজ করে না।" ডঃ ভাবসারের পরামর্শ ভাতে বা রুটিতে এক চামচ ঘি যোগ করুন আর মাইগ্রেনকে দূরে রাখুন৷

খাবার
কোন খাবার খেলে সমস্যা হয় তা আপনাকে বুঝতে হবে। কাজুবাদাম, ওয়ালনাট ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ হয় বলে খেতে পারেন। আদা কুচি চিবোলে উপকার পাওয়া যায়। সানফ্লাওয়ার অয়েলে রান্না করলেও রোগীর জন্য ভালো।

পাঁচ উপকারিতায় ল্যাভেন্ডার অয়েল

ল্যাভেন্ডার অয়েল
ইউক্যালিপটাস অয়েল, মিন্ট অয়েল দিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করলে আরাম পাওয়া যায়। আর ল্যাভেন্ডার অয়েল যদি রোগী সেবন করেন, তবে ১৫ মিনিটের মধ্যে ব্যথা কমতে শুরু করবে। 

কিশমিশ
যদি মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি চান, তাহলে ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন। এটি শুধু মাথাব্যথাই নয়, বমি বমি ভাব, জ্বালাপোড়ার সমস্যা থেকেও মুক্তি দেবে। 

ঘুম
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত।

এছাড়া কিছু খাবার আছে যা খেলে এই ব্যথায় আপনাকে স্বস্তি এনে দেবে। এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা খেলে মাইগ্রেনের সমস্যা কমতে পারে। মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পেতে যেসব খাবার খাবেন। 

সবুজ শাকসবজি
পালং শাক, শাকসবজি: মতো সবজিতে ম্যাগনেসিয়াম ~ ও ভিটামিন বি-তে ভরপুর। দুটি উপাদানই মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করতে সহায়ক

বাঁধাকপি
বাঁধাকপির ম্যাগনেশিয়াম, ওমেগা ৩ ও ফাইবার, বাঁধাকপির স্যুপ ও স্মুথি বা সালাদ। এসব খাবার, মাইগ্রেনের ব্যথা কমায়। এছাড়া রয়েছে গাজর ও মিষ্টি আলু। গাজর ও মিষ্টি আলুতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। আরও রয়েছে ভিটামিন সি, বি২, বি৬, নিয়াসিন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস আছে, যা ব্যথা দূর করে।

মাশরুম
মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে আরেকটি বিশেষ খাবার হচ্ছে মাশরুম। মাশরুমে ম্যাগনেশিয়াম ও রিবোফ্লোবিন থাকায় মাইগ্রেনের স্থিতি ও পুনরাবৃত্তি রোধ করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্লাবিন বা বি২, যা অন্ত্রের রোগের পাশাপাশি মাথাব্যথা দূর করতে সহায়ক।

আরও পড়ুন: মাথা ব্যথার যত কারণ, জেনে নিন করণীয়

কলা
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, যা মাইগ্রেনের ব্যথার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। 

যেসব খাবার খাওয়ার পর পানি খেতে নেই

পানি
এটি শরীরকে আর্দ্র রেখে ব্যথার তীব্রতা কমায় এবং মাইগ্রেনের কারণে সৃষ্ট মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

চেরি
মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে চেরি ফলের জুসও ভালো বেশ উপকারী। চেরিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনলস নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। চেরি স্ট্রেস দূর করে, মাথাব্যথা কমায়।

অরগান মিট
ভ্রমণে গেলে অনেকের মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। তারা খেতে পারেন অরগান মিট। ভ্রমণের সময় এই অরগান মিট রাখতে পারেন বা যাত্রার আগে খেতে পারেন।

চিংড়ি ও আদা চা
চিংড়ির অ্যাসটাজ্যানথিন মাইগ্রেনের অ্যাটাক কমায়। এছাড়া মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে আদা চা বেশ কাজে দেবে।

যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তারা দুটি অভ্যাস এড়িয়ে চললে ভালো। এতে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

পেট খালি না রাখা
দীর্ঘক্ষণ পেট খালি থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা বা সমস্যা শুরু হতে পারে। পেটে খালি থাকলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মাথা চাড়া দেয়, যা মাইগ্রেনের ব্যথাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ছাড়া মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রচুর পানি পান করুন। কারণ ডিহাইড্রেশন মাথাব্যথার বড় কারণ।

আবহাওয়া
অতিরিক্ত রোদে ঘোরাঘুরির কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত গরম, অতিরিক্ত আর্দ্রতার তারতম্যে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে। চিকিৎসা ছাড়া দীর্ঘদিন মাইগ্রেনে ভূগোলে ডিপ্রেশন এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ রকম সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শ নিতে হবে। 

সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়, দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার, মাথায় রক্তক্ষরণ প্রভৃতি কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চক্ষুবিশেষজ্ঞের পাশাপাশি স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। ঘরোয়া উপায়ে সাময়িক মুক্তি মিললেও মাইগ্রেনের সমস্যায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷