সংঘর্ষের পর এখনো থমথমে ড্যাফোডিলের ক্যাম্পাস

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা। গতকাল সোমবার (১৩ মার্চ) রাত ৮টার দিকে ঢাকার আশুলিয়ার চারাবাগ ও কুমকুমারি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসের পাশেই স্থানীয়দের সাথে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ৪ জন সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ ৪ শিক্ষক এবং ১৩ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভাঙচুর করা হয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক দোকান-পাটে। সংঘর্ষের জেরে আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়টির সকল ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঐ এলাকায় মোড়ে মোড়ে অবস্থান করছেন পুলিশ সদস্যরা। সংঘর্ষের পর এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায়।

ঘটনার কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, সোমবার রাতে দুজন শিক্ষার্থী বাইক নিয়ে আসার সময় রাজু মার্কেটের সামনে তাদের বাইকে ধাক্কা দেয় একটি লেগুনা। এতে আহত হন ঐ শিক্ষার্থীরা। এরপর চারাবাগ এলাকায় তারা ঐ লেগুনাকে থামালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তখন স্থানীয় লোকজন এ হামলায় জড়িয়ে পড়ে এবং ঘটনা জানাজানি হলে আশে-পাশে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দিলে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়। এরপর আশুলিয়া থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে একই সাথে শিক্ষার্থীদের থামাতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আজমল হোসেন আকিব জানান, এই রুটে চলাচল করা লেগুনা চালকরা অধিকাংশ সময়ই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকে। তাদের বেপরোয়া লেগুনা চালানোর কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। কালকেও এ রকমই ঘটনা ঘটে। এরপর তারা সংঘটিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা করেছে। আর তারা যে, লুটপাটের অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়; এ এলাকায় তো কিছু পাওয়াই যায় না। শিক্ষার্থীদের কোনো কিছু লাগলে তারা মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কেনাকাটা করে।

আর স্থানীয়রা বলছেন, লেগুনার সাথে এক শিক্ষার্থীর ধাক্কা লাগার ঘটনায় স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এরপর শিক্ষার্থীরা আশেপাশের প্রায় অর্ধ শতাধিক দোকান-পাট ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে সড়কেও আগুন জ্বালিয়ে দেয় তারা।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলেউর রহমান জানান, লেগুনার ধাক্কায় আমাদের এক শিক্ষার্থী আহত হলে অন্য শিক্ষার্থীরা এর বিচার চাইতে গেলে লেগুনার ড্রাইভাররা আমাদের শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরাও ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং পরিস্থিতি সংঘর্ষ রূপ নেয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমাদের ১৩ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এছাড়াও, এ ঘটনায় আমিসহ আমাদের মোট চারজন শিক্ষক এবং পুলিশেরও চার সদস্য আহত হয়েছেন।

প্রক্টর আরও বলেন, আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে; পুলিশ নিরাপত্তায় কাজ করছে। আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয়দের সাথে একটি সুন্দর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে। তিনি এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপের বিপরীতে সমাধান দেখছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধানে।