রাশিয়ায় সেনাবাহিনীর মানহানি, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের সাড়ে ৮ বছরের জেল

দিমিত্রি ইভানভ

রাশিয়ার সেনাবাহিনী সম্পর্কে ‘মিথ্যা’ তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে সরকাবিরোধী একটি চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাতাকে সাড়ে ৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার নাম দিমিত্রি ইভানভ। রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির গণিত এবং সাইবারনেটিক্সের সাবেক শিক্ষার্থী ২৩ বছরের ইভানভ। তিনি টেলিগ্রাম অ্যাপে সরকারের সমালোচনামূলক একটি চ্যানেল তৈরি করেন ও পরিচালনা করতেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের নামে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যা বলতেন, ইভানভ সেগুলোর সমালোচনা করে নিয়মিত পোস্ট দিতেন।

আদালতের প্রেস সার্ভিসকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা তাসের খবরে বলা হয়, ‘মস্কোর একটি আদালত ইভানভকে দোষী সাব্যস্ত করেন...এবং তাকে ৮ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।’ রাষ্ট্রপক্ষ তাঁর ৯ বছরের কারাদণ্ড চেয়েছিল।

স্বাধীন সংবাদ প্ল্যাটফর্ম মিডিয়াজোনা জানিয়েছে, ইভানভ আদালতকে বলেছেন, ‘আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে রাশিয়া মানে পুতিন নন। লাখ লাখ রাশিয়ান এই সন্ত্রাসী যুদ্ধের বিরুদ্ধে। এটি আমাদের ইতিহাসে কালো অধ্যায়। কিন্তু ভোর হওয়ার আগে ঠিক এমন অন্ধকারই থাকে।’

মিডিয়াজোনার খবরে বলা হয়, ইভানভ তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্টের জন্য গত বছর স্বল্পমেয়াদে দুবার কারাভোগ করেন। ২০২২ সালের জুন থেকে তিনি আটক আছেন।

এপির আরেক প্রতিবেদন বলছে, গ্রেপ্তারের পর ইভানভকে প্রথমে একটি অননুমোদিত সমাবেশ আয়োজনের অভিযোগে ১০ দিনের জন্য জেলে রাখা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ তাকে ২৫ দিনের জন্য একই অভিযোগে আবার জেলে পাঠায় এবং তারপরে তাকে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জন্য গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এছাড়া পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী তার ফাইনাল পরীক্ষা মিস করেন এবং এমনকি তিনি নিজের চূড়ান্ত গবেষণাপত্রও জমা দিতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

অবশ্য ইভানভের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, যেহেতু কর্তৃপক্ষ ইভানভের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে মিথ্যা তথ্য থাকার বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য কর্মকর্তাদের বিবৃতি ব্যবহার করেছে, তাই তাদের আদালতে জবানবন্দি দেওয়া উচিত।