রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ইনস্টিটিউট

‘হাফিজ হায়দারের বিচার করো, নয়তো ৩০০ শিক্ষার্থীকে পুড়িয়ে মারো’

উদ্ভিদ বিজ্ঞান
রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) অধিভুক্ত রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সের ক্লাস-পরিক্ষাসহ যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম সচল, শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদান ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে ‘হয় হাফিজ হায়দারের বিচার করো, নয় ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে পুড়িয়ে মার’, ‘পূর্ণাঙ্গ পরিচালক পরিষদ চাই, ক্লাস রুমে ফিরতে চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই অতিদ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা চাই’, ‘দুর্নীতবাজদের বিচার চাই, পরীক্ষা চাই রুটিন দিন’, ‘স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে দিন, ক্লাস পরীক্ষা ফিরিয়ে দাও’ এমনসব প্লেকার্ড প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগের পরিচালকদের গাফিলতির জন্য দীর্ঘ চার মাস ধরে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। এসময় নিয়মিত ভর্তি ফি, ল্যাবসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নিলেও একাডেমিক কার্যক্রম শুরু না করা, ল্যাব লাইব্রেরি না থাকা এবং শিক্ষকসহ কর্মচারীদের বেতন না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলেন তারা।

এসময় ইনস্টিটিউটের দুজন পরিচালক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.এফ.এম. আলী হায়দার ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ড. হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে শাস্তিসহ ৫ দফা দাবি জানান তারা।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিভিন্ন বিভাগের স্থগিত থাকা ব্যবহারিক পরিক্ষা চালু করা, পরিচালকদের (ড. এফ এম আলী হায়দার ও ড. হাফিজুর রহমান) অপসারণ করে নতুন পরিচালনা পরিষদ গঠন, শিক্ষক ও কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতাদি পরিশোধপূর্বক প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রম ফিরিয়ে দেয়া, দুর্নীতিবাজ পরিচালকদের (ড.এফ.এম. আলী হায়দার ও ড. হাফিজুর রহমান) শাস্তি প্রদানপূর্বক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। 

ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা সেমিস্টার ফি দিয়ে লেখাপড়া করি। প্রতি ছয় মাস পরপর ২৮ হাজার টাকা ফি দিচ্ছি। ৪ মাস ধরে আমাদের সকল ক্লাস, পরীক্ষা স্থগিত হয়ে আছে। আমাদের শিক্ষকদের ঠিকঠাক বেতন দেওয়া হয় না। এছাড়াও পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যে টাকা দিয়ে থাকি সেগুলো দুর্নীতিবাজ পরিচালক লুটে পুটে খেয়েছে। পাশাপাশি আমাদের ল্যাব ও লাইব্রেরির কোনো সুযোগ সুবিধা নাই। আমরা দুর্নীতিবাজ পরিচালকের শাস্তি ও সকল ক্লাস, পরীক্ষা কার্যক্রম চলমান চাই। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে আত্মহত্যা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না জানিয়ে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সালমান শান্ত বলেন, ৩০০ শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে। অনেকের বাড়ি থেকে বলে দিয়েছে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে তোমাদের আর পড়াশোনা করতে হবে না। আজ চার মাস ধরে আমাদের থিওরি পরীক্ষা শেষ কিন্তু প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষা হচ্ছে না। তাই অনেকে হতাশ হয়ে যাচ্ছে। রাবি প্রশাসন আমাদের অনেক সাহায্য করেছে কিন্তু আমাদের পরিচালক রাবির সাথে ভালো সম্পর্ক রাখেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্স পরিচালক ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.এফ.এম. আলী হায়দার ফোন ধরে ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।