ফের সিলগালা করে দেয় হল প্রশাসন

রাবি হলের সিলগালা কক্ষে তালা ভেঙে দখল ছাত্রলীগের

হল প্রশাসন কক্ষটি আবারও সিলগালা করে দেয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলে সিলগালা করা তালা ভেঙে কক্ষ দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ওই হলের ১১০ নম্বর কক্ষের সিলগালা করা তালা ভেঙে সেখানে ছাত্রলীগের একজন কর্মীকে তুলে দেওয়া হয়। পরে আজ শনিবার দুপুরে হল প্রশাসন কক্ষটি আবারও সিলগালা করে দেয়।

হলটির একাধিক সূত্র জানায়, গত বছরের ২৫ জুন দিবাগত রাত দুইটার দিকে আবাসিক শিক্ষার্থী মো. মুন্না ইসলামকে গালাগাল ও মারধর করে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। পর দিন মুন্না হল প্রশাসনে দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, রাত দুইটার দিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন, সহ-সভাপতি পারভেজ, কর্মী তৌহিদসহ ১০ থেকে ১৫ জন এসে তার বিছানাপত্র কক্ষের বাইরে বারান্দায় ফেলে দেন এবং তাকে ঘাড় ধরে বাইরে বের করে দেন। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। ওই রাতে অন্য একটি হলের গেস্টরুমে ছিলেন তিনি।

ওই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কুদরত-ই-জাহান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক কয়েকজন শিক্ষক ওই হলে যান। রাতেই ছাত্রলীগের তিনজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় হল প্রশাসন। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগ কর্মী তাসকীফ আল তৌহিদকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম হোসেন ও সহ-সভাপতি পারভেজ হাসানকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে এখনো ওই প্রতিবেদন জমা দেয়নি কমিটি।

ওই সময় হল ত্যাগের নির্দেশনা না মানায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাসকীফ আল তৌহিদের কক্ষ সিলগালা করে হল প্রশাসন। তখন থেকে কক্ষটি তালাবদ্ধ ছিল।

হল প্রাধ্যক্ষ এ. এইচ. এম. মাহবুবুর রহমান বলেন, হলের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেনের অনুসারীরা রাতে তাদের সিলগালা করা তালা ভেঙে সেখানে হৃদয় নামের একজনকে তুলে দেন। পরে আজ হৃদয়কে বের করে দিয়ে কক্ষ আবারও সিলগালা করা হয়েছে। ওই কক্ষে একজন ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা আছে। সেখানে হলের সবচেয়ে ভালো ফল করে এমন শিক্ষার্থীকে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে ও হল প্রশাসনের নির্দেশে কক্ষটি সিলগালা করেছিলাম। এ তালা ভাঙা অপরাধ। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে একটি লিখিত অভিযোগ পাঠানো হবে। আমরা ইতোমধ্যে সভা করেছি।

এ ঘটনায় কারা জড়িত, জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ নাম জানাননি। নাম জানতে চাইলে হলের দায়িত্বরত অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এড়িয়ে যান।

কিছু হলেই হল প্রশাসন তার নাম বলে দেয় দাবি করে নবাব আবদুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন বলেন, একটা রাজনৈতিক পক্ষ আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ আমি এ ঘটনায় ছিলাম না। পরে শুনেছি। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।