সন্তান গড়ার কারিগরদের স্বীকৃতি দিল ‘পড়শি’

সন্তানকে সুশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত করার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার আমিনী গ্ৰামের ১০ অভিভাবককে সম্মাননা দিয়েছে সামাজিক সংগঠন ‘পড়শি’। উপজেলার আমিনী রামচন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সম্প্রতি এ  অনুষ্ঠানে তাদের সম্মাননা দেওয়া হয়।

সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মো. আবদুর রহিম, মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক, মো. আবু বাক্কা, মো. আবদুল ওহাব, মো. আবদুল হাকিম, মো. আবদুর রহিম, মো. আবদুল জব্বার, মো. আবদুল গাফফার, মো. ফারুক হোসেন ও জুলফিকার আলী।

একই অনুষ্ঠানে আমিনী গ্রাম থেকে প্রথম স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী মো. আবদুর রহিম ও প্রথম পিএইচডি ডিগ্রিধারী ড. মো. ইলিয়াস হোসেন, প্রথম এফসিএমএ মো. ইয়াহইয়া, দেশে প্রথমবারের মতো জিপিএ পদ্ধতি চালু হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে একমাত্র জিপিএ-৫ পাওয়া মো. হাবিবুর রহমান এবং প্রথম হাফেজ মো. রবিউল ইসলামকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান কবীর। তিনি সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হাতে উত্তরীয়, ক্রেস্ট ও মানপত্র তুলে দেন।

স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের বিভাগীয় বিক্রয় ব্যবস্থাপক ও পড়শির সভাপতি মো. জাহিদ আল ইমরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নাভারণ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান আলী, ইউনাইটেড স্টেটস পোস্টাল সার্ভিসের কর্মকর্তা ও পড়শির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন, চট্টগ্রামে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও পড়শির সহ-সভাপতি ড. মো. ইলিয়াস হোসেন বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক ও পড়শির সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসেন, রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. মেহেদী হাসান, আমিনী রামচন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি মো. হারুন অর রশিদসহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও পড়শির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. শাহজাহান কবীর বলেন, শিক্ষার প্রসার ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সামাজিক সংগঠন ‘পড়শি’ অনবদ্য ভূমিকা পালন করছে।

শিক্ষা সচেতনতা তৈরিতে পড়শি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অব্যাহত রাখবে এবং জেলার অনুকরণীয় আদর্শ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শাহজাহান কবীর প্রান্তিক পর্যায় থেকে উচ্চশিক্ষিত হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নিজ নিজ গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি গ্ৰামোন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানান।

নাভারণ ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী বলেন, নাভারণ ইউনিয়নের দারিদ্র্যপীড়িত একটি গ্রাম আমিনী। এই গ্রাম থেকে অনেক মেধাবী সন্তান দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপর্যায়ের কর্মরত। গ্রামের এসব অভিভাবকরা সীমাহীন কষ্ট করে তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করেছেন। তিনি শিক্ষা সচেতন অভিভাবকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

শাহজাহান আলী আরও বলেন, পড়শির কার্যক্রম দেখে আমি অভিভূত। অর্থাভাবে যারা পড়াশোনা করতে পারছে না, তাদের সহযোগিতা করছে। এছাড়া সমাজে কুসংস্কার দূর করা, স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি ও যুবসমাজ গঠনে ভূমিকা রাখছে।

তিনি পড়শিকে মানব কল্যাণে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি নাভারণ ইউনিয়নে শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। সন্তানের প্রতি নজর রাখার পাশাপাশি শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্যে থেকে তাদের বিচ্যুতি ঠেকাতে অভিভাবকদের অনুরোধ করেন চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানে গ্রামের শিশু, কিশোর ও যুবকদের জন্য বিভিন্ন খেলার আয়োজন ও জয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।