ডাকাত দলের হামলা

বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে ৫ জেলের লাশ

জীবিত উদ্ধার হওয়া ৪ জেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যায় কোস্ট গার্ড

বরগুনায় বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ডাকাত দলের কবলে পড়েছিলেন ৯ জেলে। তাদের মধ্যে চারজন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছেন ডাকাত দলের হামলায় নিহত বাকি পাঁচ জেলের মরদেহ সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মৃত জেলেদের মরদেহ উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ড। 

এর আগে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বঙ্গোপসাগর থেকে ট্রলারের মাঝি শফিক, ইয়াসিন জোয়াদ্দার, জামাল ও আব্দুল হাইকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। যেসব জেলের মৃত্যুর পর সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন- কাইয়ুম জোয়াদ্দার, আবুল কালাম, খায়রুল, আব্দুল আলীম ও ফরিদ মিয়া। তারা সবাই বরগুনার বাসিন্দা।

জীবিত উদ্ধার হওয়া জেলে ইয়াসিন জোয়াদ্দার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাকাত দলের মার খেয়ে সাগরে পরে গিয়ে আমরা নয়জন একটি বয়া ধরে ৭০ ঘণ্টা ভেসে ছিলাম। পরে একটি জালে আটকে যাই। এর আগে আমার বড় ভাই কাইয়ুম জোয়াদ্দার সাগরে ভাসমান অবস্থায় আমার হাতেই মারা যায়, এভাবে একে একে আরও চারজন মারা গেলে তাঁদের সাগরে ভাসিয়ে দিই।’

কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন কমান্ডার এম মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গোপসাগরে ডাকাতের হামলার ঘটনায় নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। চারজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি জেলেদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক মুস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, চার জেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আব্দুল হাই নামে এক জেলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে বরগুনার পাথরঘাটা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার মজুমদার বলেন, উদ্ধার হওয়া জেলেদের কাছ থেকে পাঁচজনের মরদেহ সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। মরদেহ উদ্ধারে নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও র‍্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, জেলে উদ্ধারের বিষয়টি জেলা প্রশাসক জানেন। উপজেলা প্রশাসন থেকে পর্যবেক্ষণের আছে পরিবারকে শুকনো খাবার এবং কম্বল দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ১৮ জেলে নিয়ে পাথরঘাটা থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাত্রা শুরু করে এফবি ভাই ভাই নামের ট্রলারটি। রাত ২টার দিকে বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পায়রা বন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় জলদস্যুরা হামলা করে। এসময় নয় জেলেকে জিম্মি করে ট্রলারে থাকা মালামাল লুটে নেয় এবং তাদের মারধর করে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়।