বহিরাগতদের দৌরাত্ম্যে ঝুঁকিতে পবিপ্রবির জার্মপ্লাজমের গবেষণা

নিরাপত্তা
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জার্মপ্লাজম কেন্দ্র

২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকের উচ্চশিক্ষা প্রকল্প হেকেপের (HEQEP) অর্থায়নে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) গবেষণার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় জার্মপ্লাজম কেন্দ্র। স্থানীয় ফলমূল ও বৃক্ষের জিনগত উন্নতি সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে গবেষণা কেন্দ্রটির। তবে, বর্তমানে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের কারণে কেন্দ্রটির গবেষণা কার্যক্রম হুমকির সম্মুখীন।

কেন্দ্রটির সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, গবেষণা কেন্দ্রের এলাকা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম থাকলেও এখানে নিয়মিতই বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঘটে। তাঁরা অনেকসময় না বুঝেই গবেষণালব্ধ ফুল, ফল ও বৃক্ষের ক্ষতিসাধন করে। এর ফলে গবেষণার ফলাফল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং গবেষণা কার্যক্রম ব্যহত হয়।

আরো পড়ুন: প্রশাসনের ডাকে ক্যাম্পাসে আসছেন অভিযুক্তরা, থাকবেন ভুক্তভোগীও

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় চার একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কেন্দ্রটিতে নেই কোনো মজবুত ও উঁচু সীমানা প্রাচীর। কেবলমাত্র বেল, বৈচী ও বন্য বরইয়ের মতো কিছু সবুজ বেষ্টনীজাতীয় বৃক্ষ আর কাঁটাতার দিয়ে ঘেরাও করা রয়েছে। এছাড়া, নেই কোনো সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাকর্মী এবং পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা। ফলে বহিরাগতরা অনায়াসেই কেন্দ্রটিতে প্রবেশ করে ফুল, ফল এবং বৃক্ষের ক্ষতিসাধন করার সুযোগ পায়। এমনকি অভিযোগ রয়েছে নিরাপত্তাকর্মী না থাকার সুযোগে অনেকসময় তারা কাঁটাতার কেটে অনুপ্রবেশ করেন ।

জার্মপ্লাজম কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে এখানে  বেশ কয়েকটি উন্নত ও উচ্চফলনশীল ফলের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে পিএসটিইউ বিলাতী গাব-১, পিএসটিইউ বিলাতী গাব-২, পিএসটিইউ ডেউয়া-১, পিএসটিইউ ডেউয়া-২, পিএসটিইউ বাতাবি লেবু-১, পিএসটিইউ কামরাঙ্গা-১, পিএসটিইউ কামরাঙ্গা-২, পিএসটিইউ তেঁতুল-১, পিএসটিইউ বৈচী-১ অন্যতম। 

এছাড়া, জার্মপ্লাজমের অধীনে ইতোমধ্যে ৪০ জন শিক্ষার্থী মাস্টার্স এবং ৪ জন শিক্ষার্থী পিএইচডি সম্পন্ন করছেন। এর পাশাপাশি অধীনে মাস্টার্স পর্যায়ে ১১ জন এবং পিএইচডি পর্যায়ে ২ জন অধ্যয়নরত আছেন। 

আরো পড়ুন: গুচ্ছ থেকে বের হতে চান জবি শিক্ষকরা

জার্মপ্লাজম কেন্দ্রটির নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগযোগ করলে জানানো হয় কেন্দ্রটি প্রকল্পের আওতায় থাকায় প্রকল্পের অর্থ দিয়েই নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তবে কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বর্তমানে সরকারি অর্থায়নে এর কার্যক্রম চলছে, যার সিংহভাগই জার্মপ্লাজমের ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কার্যক্রমে ব্যয় হয়ে যায়। ফলে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য কোন কর্মী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। 

এ বিষয়ে জার্মপ্লাজম কেন্দ্রের তত্বাবধায়ক প্রফেসর ড. মাহবুব রাব্বানী বলেন, জার্মপ্লাজম কেন্দ্রটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় বরং সমগ্র দেশের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগার। বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে বরাবরই আন্তরিক। আশা করছি জার্মপ্লাজমের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, প্রকল্পের অর্থায়নেই নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।