চাঁদা না পেয়ে টিকিট কাউন্টারে তালা দিলেন ছাত্রলীগ নেতা

 বাস টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারে তালা দিলেন ছাত্রলীগ নেতা
বাস টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারে তালা দিলেন ছাত্রলীগ নেতা

চাঁদা আদায় করতে না পেরে বাস টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকির বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি বাস কোম্পানি যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহনের চালকের এক সহযোগীকে মারধর করেন বলে জানা গেছে। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন তার ভাই লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব পাটওয়ারী। 

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে লক্ষ্মীপুর-ফেনী রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহন। পরে টার্মিনালে বাসশ্রমিক আয়োজিত মানববন্ধনে জানানো হয়, কাউন্টারের তালা খুলে না দেওয়া পর্যন্ত তারা বাস চলাচল বন্ধ রাখবেন। 

মানববন্ধনে যমুনা হাই ডিলাক্সের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন জানান, বিগত ১৫ বছর ধরে তাদের কোম্পানির ৫২টি বাস লক্ষ্মীপুর-ফেনী রুটে সেবা দিয়ে আসছে। এত বছরের ব্যবসায়ী জীবনে কখনও কাউকে চাঁদা দিতে হয়নি। হঠাৎ করে ছাত্রলীগ নেতা রকি তার কাছ থেকে মাসিক ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রকির ভাই আওয়ামী লীগ নেতা রাকিব পাটওয়ারী এসে ২ লাখ টাকা করে মাসিক চাঁদা দাবি করেন। 

আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রিট করবে এসএসসি-১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা

তিনি জানান, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রকি ও রাকিব বাস টার্মিনালে কোম্পানিটির টিকিট কাউন্টারে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তারা বাসের চালক ও সহযোগীকে হুমকি দেন। চদ্রগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে একপর্যায়ে চালকের সহযোগীকে তারা মারধর করেন। কাউন্টারের তালা খুলে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ঘটনায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে জানান তিনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি বলেন, কোম্পানিতে আমাদের মালিকানাধীন তিনটি বাস আছে। প্রতিদিন বাসপ্রতি ৬০০ টাকা করে নেয় যমুনা হাই ডিলাক্স বাস পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ওই টাকা নিতে নিষেধ করেছি। এতে কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ কর্তৃপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। বাসচালকের সহযোগীকে কে বা কারা মারধর করেছে তা আমরা জানি না।  

বাস কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদা দাবির বিষয়ে জানা নেই জেলা বাস মালিক সমিতির। সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, বাসচালক ও শ্রমিকদের মানববন্ধের কথা শুনেছি। তবে চাঁদা দাবির বিষয়ে আমার জানা নেই। দুই পক্ষের কেউ এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, মানববন্ধনের কথা শুনেছি। কেউ অভিযোগ দেয়নি। ঘটনা নিয়ে দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে বাস চলাচল শুরু করতে ব্যবস্থা নেব।