ধর্ষণচেষ্টার সময় গৃহবধূর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আ.লীগ নেতার মৃত্যু

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ধর্ষণচেষ্টা করায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছেন এক গৃহবধূ। পরে আহত আ.লীগ নেতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায় স্থানীয়রা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এঘটনায় ওই গৃহবধূকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে আটটার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আ.লীগ নেতা এরশাদুল ইসলাম মারা যান। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি ছিলেন।

পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই গৃহবধূকে প্রথম ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ইতিমধ্যেই আদালতে এরশাদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে।

গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করেন, ধর্ষণ মামলায় কিছুদিন কারাগারে ছিলেন এরশাদুল। জামিনে বের হয়ে এসে তিনি তাঁর স্ত্রীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বাজারে গেলে এরশাদুল তাঁদের বাড়িতে ঢুকেন। এরপর এরশাদুল তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী চিৎকার দিলে এরশাদুল দৌড়ে পালিয়ে যান। সন্ধ্যায় আবারও এরশাদুল তাঁদের বাড়িতে গিয়ে তাঁর  স্ত্রীকে  ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এই সময় নিজেকে বাঁচাতে তাঁর স্ত্রী ঘরে থাকা ধারালো অস্ত্র নিয়ে এরশাদুলের ওপর হামলা চালায়। এতে এরশাদুল আহতন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁর স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এরশাদের ভাই  শাহীন মিয়া বলেন, ‘আদালতে ধর্ষণ মামলা চলমান অবস্থায় আমার ভাই ওই নারীর ঘরে কেন গিয়েছিলেন, সেটা বলতে পারছি না। তবে মারা যাওয়ার আগে আহতবস্থায় হাসপাতালে আমার ভাই একটি ভিডিও বক্তব্যে দাবি করেছেন, দুই লাখ টাকার বিনিময়ে আপসের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ওই নারী এবং তাঁর দুই স্বজন মিলে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে।’

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. জাকারিয়া রানা বলেন, এরশাদুল নামে ওই রোগীকে গতকাল রাতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুরুষাঙ্গ কাটায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সকাল সাড়ে আটটায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুলের বিরুদ্ধে গত বছর ওই গৃহবধূ মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় জামিনে এসে গৃহবধূকে আবারও ধর্ষণচেষ্টা করতে গেলে এরশাদুলের ওপর হামলা চালায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে তিনি মারা গেছেন। এরশাদকে হত্যা করার অভিযোগে ওই গৃহবধূকে রাতেই আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় এরশাদুলের স্বজনেরা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

কিচক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন এরশাদুলের রাজনৈতিক পদ পদবি নিশ্চিত করে বলেন, এরশাদুল কিচক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ছিলেন।