আওয়ামী লীগে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন যারা
- ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩:১৩
আগামীকাল শনিবার আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এই দলটি প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে আজ পর্যন্ত ২১টি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব কাউন্সিলে এখন পর্যন্ত সভাপতি হয়েছেন ৬ জন। এর মধ্যে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ ৯ বার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ দুইবার এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন একবার নির্বাচিত হয়েছেন দলের আহ্বায়ক। এছাড়াও মহিউদ্দিন আহমেদ দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ৯ জন। সবচেয়ে বেশি চারবার করে হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান। এছাড়া তাজউদ্দিন আহমেদ তিনবার, আবদুর রাজ্জাক ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও ওবায়দুল কাদের দুইবার করে, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, আবদুল জলিল একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন পুরনো ঢাকার রোজ গার্ডেনে গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে জন্ম নেয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে ১৯৫৫ সালের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সব ধর্ম, বর্ণের প্রতিনিধি হিসেবে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয় আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিরা: দলের প্রথম সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তিনি ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত চারটি কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ওই বছর একটি বিশেষ কাউন্সিলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ। ১৯৬৪ সালে দলের পঞ্চম কাউন্সিলে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতি পদে ছিলেন ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত। ওই বছর ষষ্ঠ কাউন্সিলে দলের সভাপতি হন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত সভাপতি পদে ছিলেন।
১৯৭৪ সালে দশম কাউন্সিলে সভাপতি হন এ এইচ এম কামরুজ্জামান। ১৯৭৫ সালে ঘাতকের গুলিতে কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত হন তিনি। এরপর ১৯৭৮ সালে কাউন্সিলে সভাপতি হন আবদুল মালেক। তিনি ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ছিলেন। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৪১ বছরের বেশি সময় ধরে দলের সভাপতি পদে আছেন শেখ হাসিনা। দলের ১৩তম কাউন্সিলে তিনি প্রথম সভাপতি হন। সর্বশেষ ২১তম কাউন্সিলেও তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে ও জাতীয় চার নেতা নিহত হওয়ার পর ১৯৭৬ সালে মহিউদ্দিন আহমেদ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হন। এর পরের বছর ১৯৭৭ সালে দলের ১১তম কাউন্সিলে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে আহ্বায়ক করা হয়।
সাধারণ সম্পাদক যারা: আওয়ামী লীগ গঠনের পর ১৯৪৯ সালে দলের প্রথম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। এরপর ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত দলের দ্বিতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। এরপর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হন আবদুর রাজ্জাক।
১৯৮৭ সালে সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। ছিলেন ১৯৯২ সাল পর্যন্ত। এর জিল্লুর রহমান আবারও দুই মেয়াদে ২০০২ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ সালের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হন আবদুল জলিল। ছিলেন ২০০৯ সাল পর্যন্ত। ওই বছর দলের ১৮তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত।
২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দুই দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনেও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক পুণর্নির্বাচিত হন।