দেশে ১০ মাসে ৮৩০ নারীকে ধর্ষণ

সংবাদ সম্মেলন

চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৪১১ জন নারী। এর মধ্যে স্বামী ও স্বামীর পরিবার দ্বারা খুন হয়েছেন ২১৫ জন। পারিবারিক সহিংসতার কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭৯ জন নারী।

আজ ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

আসকের তথ্য অনুযায়ী, ওই ১০ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৩০ জন নারী। এর মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ১৯৫ জন। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ৩৯ জন, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটে মোট ১৪১টি এবং আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। এই কয়েক মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৪১ জন।   

এ ছাড়া যৌন হয়রানির ঘটনায় আত্মহত্যা করেছেন সাতজন নারী। যৌতুককে কেন্দ্র করে শারীরিক নির্যাতনের শিকার ৬৮ জন। নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৭২ জনকে। এসিড সন্ত্রাসের শিকার ১২ জন।

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসে নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে এবং ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে আসক যেসব দাবি জানায়—১. নারীর প্রতি বৈষমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের অনুচ্ছেদ ২ এবং ১৬(১)(গ)-এর সংরক্ষণ প্রত্যাহার ও সনদের বিধি-বিধানগুলোর পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে; ২. সাক্ষ্য আইনের সংশোধনী বিল ২০২২ অতি দ্রুত গ্যাজেট আকারে প্রকাশ ও সংশোধিত ধারাগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে; ৩. নির্যাতনসংক্রান্ত সরকারি পরিষেবা, যেমন—ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারসহ অন্য সুবিধাগুলোর সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং প্রতিটি এলাকায় যথাযথ কার্যকরী পুলিশ সহায়তা ব্যবস্থা রাখতে হবে; ৪. নির্যাতনের মামলাগুলো বিচার প্রক্রিয়া আইনে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং ভুক্তভোগীকে যাতে দুর্ভোগের শিকার না হতে হয়—এ জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ৫. ২০০৭ সালে আইন কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত ক্রাইম ভিকটিম কম্পেনসেশন অ্যাক্ট আইন প্রণয়ন করতে হবে; ৬. নারীর অধিকার সম্পর্কে সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। শিক্ষা কারিকুলামে সমমর্যাদা, সমান অধিকার, বৈষম্যহীনতা, বৈচিত্র্যতার প্রতি সম্মান প্রভূত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ৭. সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তন আনতে হবে; ৮. ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রে মহামান্য উচ্চ আদালতের ১৮ দফা নির্দেশনা সুস্পষ্টভাবে মেনে চলতে হবে এবং এর ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; ৯. নারীর চলাচলে স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা (অনলাইন ও অফলাইন উভয় ক্ষেত্রে) নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; ১০. ‘ভুক্তভোগী সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করতে হবে; ১১. নারীকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পেনশনের আওতায় আনতে হবে।