রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে যেসব খাবার খাবেন

টিপস ও টিউটোরিয়াল
রক্তে প্লাটিলেট বাড়ায় যেসব খাবার

প্লাটিলেট হচ্ছে রক্তের একধরনের ক্ষুদ্র কণিকা বা অণুচক্রিকা। প্লাটিলেট রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। সঙ্গে রক্তক্ষরণও বন্ধ করে দেয়। প্লাটিলেট কমে গেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। প্লাটিলেটের স্বাভাবিক সংখ্যা প্রতি ঘন মিলিলিটারে দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ। শুধু ডেঙ্গু জ্বরে নয়, বিভিন্ন রোগে রক্ত সংক্রমণে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমতে পারে। তবে তা কমে এক লাখের নিচে আসে সাধারণত জটিল সময়ে।

প্লাটিলেট কমে যাওয়া মানেই শরীরের বাইরে ও ভিতরে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া। অনুচক্রিকার স্বাভাবিক মাত্রা দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ। তবে যদি কখনও কাউন্ট ২০ হাজারের নিচে নেমে যায়, তখন ইন্টারনাল ব্লিডিংয়ের সম্ভাবনা থাকে। প্লাটিলেট যদি পাঁচ হাজারের কম হয়, তখন ব্রেন, কিডনি, হার্টের মধ্য রক্তক্ষরণের ভয় থাকে। রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত ক্লান্তি, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, ঘা, ইত্যাদির মতো সমস্যা।

প্লাটিলেট দ্রুত বাড়বে কিছু খাবারে। চলুন দেখে নিই কোন কোন খাবার রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা স্বাভাবিক রাখবে। 

ডালিম: রক্তের প্লাটিলেটের মাত্রা  বাড়াতে খেতে পারেন ডালিম। এতে আয়রন রয়েছে। যা প্লাটিলেট বৃদ্ধিতে সহায়ক। ডালিমের জুস টানা দুই সপ্তাহ পান করলেই রক্তে প্লাটিলেট স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তা ছাড়া শরীরে দুর্বলতা কাটাতেও বেশ উপকারী ফল ডালিম।

মিষ্টিকুমড়া: রক্তের প্লাটিলেট তৈরির কাজ করে মিষ্টি কুমড়া। এতে ভিটামিন ‘এ’রয়েছে। যা প্লাটিলেট তৈরি করতে সহায়ক। নিয়মিত মিষ্টিকুমড়ার তরকারি খাবেন। এছাড়া মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেলেও প্লাটিলেট বাড়বে। 

প্রোটিন: মুরগীর মাংস, মাছ এসব খাবার থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় বেশি। এসব খাবারে জিংক ও ভিটামিন বি টুয়েলভও থাকে প্রচুর।

পেঁপে পাতা: রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে ফেরাতে পেঁপে ও পেঁপে পাতার জুড়ি নেই। খুব দ্রুত রক্তের প্লাটিলেট ঠিক হয়ে যায়। মালয়েশিয়ার এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজির গবেষণায় এটি প্রমাণ হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে রক্তে প্লাটিলেটের কমে যায়, যা স্বাভাবিক করে দিতে পারে পেঁপে পাতার রস। প্রতিদিনই পেঁপে পাতার রস কিংবা পাকা পেঁপে খেতে পারে। দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন। 

আরও পড়ুন: শীতে গলা ব্যথা দূর করতে যা করনীয়

সবুজ শাক: পালং শাক ও অন্যান্য সবুজ শাকে প্রচুর ভিটামিন থাকে। রান্নার পাশাপাশি সালাদ ও স্যান্ডউইচের সাথে কাঁচাও খেতে পারেন এগুলো।

রসুন: রসুন রক্ত পরিশুদ্ধ করে এবং প্লাটিলেটের মাত্রা বাড়ায়। গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, রসুনে থাকা থ্রম্বোক্সেন এ টু প্লাটিলেট বাড়ায়। খাবার রান্নায় রসুন খাওয়া হয়। এছাড়া কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাসও করতে পারেন। এটি দ্রুত প্লাটিলেট বাড়াবে।

লেবুর রস: লেবুর রসে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে এটি রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রাও ঠিক করে। এটি প্লাটিলেট  ধ্বংস হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধা দিতে সক্ষম। 

গাজর: দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে উপকারী গাজর। পাশাপাশি রক্তের প্লাটিলেট বাড়ায় এটি। গাজরের জুস খেতে পারেন নিয়মিত। সালাদ বা স্যুপ হিসেবেও খেতে পারেন। 

আমলকী: আমলকীতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই লেবুর মতো আমলকীও রক্তের প্লাটিলেটের ধ্বংসকে রোধ করে।

অ্যালোভেরার রস: রক্তে প্লাটিলেট ঠিক রাখতে অ্যালোভেরা রসও উপকারী। এটি রক্তকে বিশুদ্ধ করে প্লাটিলেটের মাত্রা ঠিক রাখে। এছাড়া সংক্রমণ রুখতেও কার্যকর অ্যালোভেরার রস। এটি প্লাটিলেটের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।

কিসমিস: নিয়মিত কিসমিস খেলেও রক্তে প্লাটিলেট বাড়বে। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা শরীরে শক্তি জোগায়। ওটমিল বা টক দইয়ের সঙ্গে কিশমিশ মিশিয়ে খেতে পারেন। প্লাটিলেট দ্রুত বাড়াতে এটি কার্যকর।

শিম: ভিটামিন বি নাইন সমৃদ্ধ শিম প্লাটিলেট উন্নত করতে পারে।