ঢাবি ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

লোগো
লোগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, প্রায় একই সময়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কর্মসূচি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলেরও।

দু’টি ছাত্র সংগঠনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে ছাত্রদলের। একইদিন কিছু সময় আগে বেলায় ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ উপাচার্যের সঙ্গে  সাক্ষাৎ করবেন।

আরও পড়ুন: কর্মী সংগ্রহ নিয়ে চবি ছাত্রলীগে দফায় দফায় সংঘর্ষ

বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪.৩০টায় ঢাবি ছাত্রদলের নতুন কমিটি উপাচার্যের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবে এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যৌক্তিক বিষয় তাকে অবহিত করবেন।

অন্যদিকে ছাত্রলীগ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় মধুর ক্যান্টিন থেকে পদযাত্রা করে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ সংকট নিরসনের দাবিতে ঢাবি ছাত্রলীগ উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করবে।

বৃহৎ দুটি ছাত্রসংগঠনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণায় সকাল থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেয়া শুরু করেছে বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সোমবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি আবাসিক হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পরদিন সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে মহড়া দিতে নির্দশনা দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, এদিন ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মারামারি হতে পারে—তাই সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দশনা দেয়া হয় ছাত্রলীগের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপগুলোতে। ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর সহয়তায় কয়েকটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে প্রায় একই ধরনের এরকম নির্দেশনার সত্যতা মিলেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সঙ্গে ছাত্রদলের নতুন কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা থাকলেও বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় শেষ পর্যন্ত তা আমরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করব। তার অনুমতি নিয়েই ছাত্রদল ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করবে। আমরাও ছাত্রলীগের নেতাদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, নিষিদ্ধ কোনো সংগঠনের নেতা তো নই।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি-জামায়াত শিক্ষার্থীদের লাশের ওপর ভর করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায়। ছাত্রসমাজ এ বিষয়ে সচেতন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শিক্ষার সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সব সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও মিছিল-সভা করেন। এটি তারই একটি সম্মিলিত বহিঃপ্রকাশ।

এর আগে গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে আসার কথা ছিলো ছাত্রদল নেতাদের। এ খবর পাওয়ার পরপরই তৎপর হয়ে উঠে ছাত্রলীগ। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথগুলোতে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা। পরে অবশ্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে না আসলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও সরে যান। 

গত মে মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এর পর থেকে ছাত্রদল ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত৷ এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ১১ সেপ্টেম্বর খোরশেদ আলমকে সভাপতি ও আরিফুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি হয়।