যশোরে ৩৫ দিনে ৮ জন এইডসে আক্রান্ত
যশোরে গত ৩৫ দিনে ৮ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ পরিস্থিতিকে একটি সতর্ক হওয়ার বার্তা বলে মনে করেছেন তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে গত ২০ বছরের ইতিহাসে এ জেলায় এত অল্প সময়ের ব্যবধানে এত সংখ্যক এইডস্ রোগী শনাক্ত হয়নি। এ পরিস্থিতিকে একটি সতর্ক হওয়ার বার্তা বলে মনে করেছেন তারা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচটিসি সেন্টারে গত ২০২০ সালের ২৩শে ফেব্ররুয়ারী থেকে এইচআইভি টেস্ট শুরু হয়। সে সময় থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৯৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
চলতি বছরের গত পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে চার দিনে ৩০ জনের এইডস পরীক্ষা করা হয়। এর ভেতর চার জনের শরীরে এইডসের জীবাণু শনাক্ত হয় এবং আগস্ট মাসেও ১৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে চার জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাসেরর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত জেলায় এইডস্ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ জন।
আরও পড়ুন: এক নজরে দেখে নিন ৮ বিভাগের সেরা ৬৮ কলেজ
হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৬ সেপ্টেম্বর ৩০ জনের রক্ত পরীক্ষা করে তিনজনের এবং ৪ সেপ্টেম্বর একজনের শরীরে এইডস শনাক্ত হয়। পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর ৫ জনকে পরীক্ষা করা হলে তাদের শরীরে এইডস ভাইরাসের সন্ধান মেলেনি। এর আগে গত আগস্ট মাস জুড়ে ১৩২ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যেও ৪ জনের শরীরে এইচআইভি-এইডসের জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৪, ৭, ১৬ ও ২৯ আগস্ট একজনের করে শরীরে এইচআইভি শনাক্ত হয়।
যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, এইডস আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা জনসাধারণের জন্যে একটি সতর্কবার্তা বা অ্যালার্ম। আক্রান্তদের অনেকেই ভারত এবং বাংলাদেশ বসবাস করেন। চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ৮ জনের শরীরে এইডস শনাক্ত হয়েছে যেটা বিশেষজ্ঞদের কাছে অস্বাভাবিক এবং সতর্কবার্তা বলে মনে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ জেলায় মোট ১৭ জন এইডস আক্রান্ত রোগী রয়েছে। তিনি আরও জানান, যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সরকারিভাবে চিকিৎসার জন্যে থেরাপি সেন্টার নেই। খুলনা মেডিকেল কলেজে এ সেন্টার আছে, সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে যশোরের এইডস রোগীর সংখ্যা। গত ৩৫ দিনে যশোরের ৮ জনের শরীরে এইডস শনাক্ত হয়েছে। তারা সবাই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ইতিমধ্যে আমরা জরুরি ভিত্তিতে এইডস রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্রের জন্য আবেদন করেছি। খুব দ্রুত আমরা যশোরে এইডস রোগীদের চিকিৎসা করবো। তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকা হওয়ায় আমরা ঝুঁকিতে আছি বেশি। আমরা দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।