হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের নামের পূর্বে ডাক্তার লেখার সুযোগ দাবি
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২১ বাস্তবায়ন ও ডা. পদবি ব্যবহারের হয়রানি, মামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার স্বার্থ সংরক্ষণ জাতীয় কমিটি।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন হোমিওপ্যাথিক সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মো. সাখাওয়াত ইসলাম ভূঁইয়া ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার স্বার্থ সংরক্ষণ জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা. শেখ মো ইফতেখার উদ্দিন।
এসময় তারা বলেন, হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারগণ বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণ যোগ্যতার সাথে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা উপলব্ধি করে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড পুনর্গঠন করেন এবং তৎকালীন হোমিওপ্যাথি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবকাঠামো উন্নয়নে সাধ্যমত আর্থিক সহযোগিতা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সরকারগুলোও কম-বেশী সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন।
আরও পড়ুন: ভিসিদের সমস্যা সমাধানে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক
সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পাকিস্তান জাতীয় সংসদে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা আইন পাশ করা হয়। সেই সময় থেকেই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ তাদের নামের পূর্বে ডাঃ পদবী ব্যবহার করে আসছেন। তাছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিবন্ধিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ অন্যান্য প্যাথির চিকিৎসকগণের ন্যয় নামের পূর্বে ডাঃ শব্দটি পদবী হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন।
স্বাধীনতা উত্তর ১৯৮৩ সালে দি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিশনার্স অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ অর্ডিন্যান্স নং XLI of 1983 পাশ হওয়ার পর থেকে ৪ বৎসর ৬ মাস মেয়াদী ডি.এইচ.এম.এস কোর্স (ডিপ্লোমা), বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড এর অধীনে এবং ৬ বছর মেয়াদি বি.এইচ.এম.এস কোর্স (ড), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সম্পন্ন করে ডিপ্লোমা চিকিৎসকগণ বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড হতে এবং ডিগ্রী চিকিৎসকগণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক, হোমিও ও দেশজ চিকিৎসা শাখা হতে চিকিৎসক রেজিস্ট্রেশন সনদ গ্রহণ পূর্বক সর্বসাধারণকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছেন। এমনকি বৈশ্বিক দুর্যোগ কোভিড-১৯ এর মহামারিতেও হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারবৃন্দ অত্যন্ত সুনাম, দক্ষতা ও সাহসের সাথে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদান রেখেছেন এবং রাখছেন।
তারা আরও বলেন, অতি সম্প্রতি হাইকোর্ট কর্তৃক বিএমডিসি’র আইন ২০১০ এর (২২, ২৯ ধারা) উল্লেখ করে ২০২০ সালে ১৯ নভেম্বর তারিখে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নামের পূর্বে ‘ডাক্তার’ লেখা যাবেনা এ মর্মে যে অবজারভেশন দিয়েছেন যা অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। ‘দি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিশনার্স অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ এর ৩৩, মাদক আইন ২০১৮ এর সংজ্ঞা ১২ এবং ভেটেরিনারী কাউন্সিল আইন ২০১১ এর অনুচ্ছেদ-২৩ এর ২ এর মর্মার্থ অনুধাবন না করে এবং পক্ষ হিসাবে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড কিংবা সংশ্লিষ্ট কোন বিভাগের কোন মতামত/বক্তব্য গ্রহণ না করে একতরফা ভাবে যে অবজারভেশন প্রদান করেছেন তা কাম্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে হোমিওপ্যাতিক স্বার্থ সংরক্ষণ জাতীয় কমিটির আহবায়ক ডা. সাখাওয়াত ইসলাম ভূঞা বলেন সারা দেশে পাঁচ লক্ষাধিক চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও ছাত্র ছাত্রীগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। অনতিবিলম্বে চিকিৎসা শিক্ষা আইন ২০২১ বাস্তবায়ন ও চিকিৎসকদের হয়রানী বন্ধ না হলে আমরা কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আমাদের দাবী বাস্তবায়নে বিনীত আহবান জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি দ্রুত এই আইন বাস্তবায়ন ও চিকিৎসকদের হয়রানী বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের নামের পূর্বে ডাক্তার লেখার সুযোগ দেবেন।