পড়া দিতে না পারায় শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে রাখলেন শিক্ষিকা
পড়া দিতে না পারায় পঞ্চম শ্রেণির ৩০ জন শিক্ষার্থীকে ৪০ মিনিট রোদে দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বুধবার (৩১ আগস্ট) লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সোহাগপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম জান্নাতুন নাহার। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবকরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ আগস্ট ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুন নাহার ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বইয়ের দুই পৃষ্ঠা পড়া মুখস্থ করে পরদিন বিদ্যালয়ে আসতে বলেন। বুধবার শির্ক্ষাথীরা মুখস্থ পড়া দিতে না পারলে উপস্থিত ৩৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে আঘাত করেন শ্রেণিকক্ষের বাইরে রোদে প্রায় ৪০ মিনিট কান ধরে দাঁড় করে রাখেন।
অভিযোগ হতে আরও জানা যায়,ছুটির পর শিক্ষার্থীরা বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনা বাবা-মাকে জানিয়ে বিদ্যালয়ে আর পড়তে যাবে না বলে জানায়। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: ‘দেড়-দুই একরের মধ্যেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক কিছু করে ফেলছে’।
পরে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিভাবকদের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
পাশাপাশি রংপুর বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপপরিচালক, জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরেও অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করেন অভিভাবকেরা।
ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী লাবণ্য আক্তার বলে, এতগুলো পড়া মুখস্থ দিতে পারিনি। এজন্য কান ধরে দাঁড় করে রাখে। আমাকেসহ আরও অনেককে স্কেল দিয়ে দিয়ে আঘাত করেছে। তাই আজকে (বৃহস্পতিবার) কেউ স্কুলে যাইনি।
এ প্রসঙ্গে সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুন নাহার বলেন, একটা পড়া ৫ দিন থেকে বাচ্চাদেরকে পড়াচ্ছি। প্রশ্ন দিয়েছি, পর পর পড়াচ্ছি কোনো ডেভেলপ হচ্ছে না। আমি বলেছি মারা তো যাবে না। যখন তারাই বলল, তাহলে কান ধরি। এরপর আমি তাদের কান ধরিয়ে বারান্দায় ১০ মিনিট রেখেছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল কবির বলেন, বুধবার তো বেশি রোদ ছিল না। বারান্দায় কিছু সময় শিক্ষার্থীদের দাঁড় করে রেখেছিল। এ ঘটনায় সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুন নাহার ভুল স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।