নির্যাতন করতেন সৎ মা, আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন পারপিতা
ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করা রাজধানীর হলিক্রস কলেজের শিক্ষার্থী পারপিতা এর আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তার সৎ মা তাকে প্রায় সময়ই নির্যাতন করতেন।
পারপিতার আত্মহত্যার পর তার সহপাঠী এবং এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার তেজগাঁও রেলস্টেশন রোডের নন্দন রোকেয়া নামের ১২তলার অ্যাপার্টমেন্টের বাসার ছাদ থেকে লাফ দেন পারপিতা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে পান্থপথের স্কয়ার হসপিটালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে রাত ৮টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পারপিতার সহপাঠীরা জানিয়েছেন, পারপিতা তার সৎ মায়ের সংসারে থাকতেন। সেখানে তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হত। এছাড়া পরীক্ষায় কম নম্বর পেলে তার বাবা তাকে বেল্ট দিয়ে পেটাতেন। এগুলো নিয়ে প্রায় সময়ই পারপিতা ক্লাসে মন খারাপ করে থাকত। এর আগে সৎ মায়ের নির্যাতন এবং বাবার মারের কারণে ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল সে।
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় কম নম্বর পেলে বেল্ট দিয়ে পারপিতাকে পেটাতেন বাবা!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পারপিতার এক সহপাঠী বলেন, সৎ মায়ের সংসারে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন পারপিতা। তাকে নিয়মিত মানসিক করা হত। তার বাবাও তাকে অত্যাচার করতেন। এই কারণে সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।
এদিকে পারপিতার মৃত্যুর ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি কমিটি করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এই কমিটি আগামী রবিবার প্রতিবেদন দাখিল করবে। আরেকটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন আমরা স্কুলে গিয়েছিলাম। স্কুলের অধ্যক্ষ এবং সহপাঠীদের সাথে এ বিষয়ে একাধিকবার কথা বলেছি। এছাড়া যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার সাথেও কথা বলেছি। শিগগিরই এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়া হবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান বলেন, হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মারা গেছেন। তার আত্মহত্যার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।