২২ আগস্ট ২০২২, ১২:৪৯

কাজে ফিরছেন না ২৩ চা বাগানের শ্রমিকরা

চা শ্রমিকদের আন্দোলন  © সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর শেষে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করবেন এমন আশাবাদে আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল। তবে এই সিদ্ধান্তের পরও আন্দোলনে অনড় রয়েছেন হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির ২৩ বাগান শ্রমিকেরা। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তারা ১৪তম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

আজ সোমবার (২২ আগস্ট) সকাল ১০টায় চান্দপুর চা বাগানসহ বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। এ সময় শ্রমিকেরা ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি ছাড়া কাজে ফিরবেন না বলে জানান। 

ভ্যালির শ্রমিক নেতারা বলছেন, কাজে ফেরার জন্য তারা এখনো কেন্দ্রীয় কমিটির কোন নির্দেশনা পাননি। এছাড়া ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের চা শ্রমিকেরা কাজে ফিরলেও তারা ফিরবেন না।

চান্দপুর চা বাগানের শ্রমিক বীরেন তন্তুবায় বলেন, ‘আমরা আজকে ১৪ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছি ৩০০ টাকা মজুরির জন্য। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন ১৪৫ টাকায় কাজে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’

চুনারুঘাটের চাঁন্দপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সাধন সাওতাল বলেন, ‘আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি কাজে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়নি। তারা যদি প্যাডের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে কাজে যাওয়ার নির্দশনা দেয় তাহলে আমরা কাজে যাব। তবে অবশ্যই ৩০০ টাকা মজুরি নিয়ে। এর কমে হলে আমরা কাজে যাব না।’ 

আরও পড়ুন: চবির ছাত্রলীগ কর্মীকে পেটালেন অটোচালক

বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খায়রুন আক্তার বলেন, ‘আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা রাতের আধারে গিয়ে হাত মিলিয়ে আসছে। ৩০০ টাকা মজুরি ছাড়া কোন শ্রমিক কাজে ফিরবে না।’ 

এদিকে রবিবার মধ্যরাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় বৈঠক শেষে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে সোমবার থেকে বাগানের কাজ চলবে।’ 

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে এই জরুরি বৈঠক হয়। যদিও বৈঠকে মালিক পক্ষের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম। চা শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, সহ সভাপতি পঙ্কজ কন্দ, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী, বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরাসহ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 

এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।