হঠাৎ লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি, বিপাকে চাঁদপুরের যাত্রীরা
চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে হঠাৎ লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করায় চাঁদপুরের যাত্রীরা পড়েছে মারাত্বক বিপাকে।যাত্রীদের দাবী লঞ্চের ভাড়া কমানোর জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা একান্ত জরুরী।
এক সপ্তাহের বেশি হলো জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এরপর লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টিও আলোচনায় ছিল। হঠাৎ করে লঞ্চের ভাড়া ৩০ ভাগ বাড়ানোর কারণে বিপাকে পড়েছেন লঞ্চের সাধারণ যাত্রীরা।
চাঁদপুর লঞ্চঘাট এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লঞ্চঘাট।
বিলাসবহুল লঞ্চগুলোতে প্রতিদিন চাঁদপুরসহ আশপাশের লক্ষীপুর ও নোয়াখালীসহ বেশ কয়েক জেলার মানুষ এই ঘাট দিয়ে ঢাকা-চাঁদপুর চলাচল করেন। এছাড়া ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়া যাত্রীদেরও রুট এটি।
আবার শরিয়তপুরের কয়েকটি উপজেলা চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট হয়ে ট্রলারে যাতায়াত করে থাকেন যাত্রীরা।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। প্রথম ১শ’ কিলোমিটারের মধ্যে ৩০ শতাংশ ভাড়া বাড়ার ফলে এখন ২.৩০ টাকার সঙ্গে .৭০ টাকা যোগ হয়ে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা। চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে পূর্বে ডেকের ভাড়া ছিল ১৫০ টাকা। আজ থেকে ৫০ (৩০ শতাংশ) টাকা বাড়িয়ে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। করোনা আগে ডেকের ভাড়া ছিলো ১০০টাকা । সেই হিসেবে গত দুই বছরে চাঁদপুর টু ঢাকা রুটে লঞ্চ ভাড়া বাড়িয়েছে ডাবল।
প্রতিদিন চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে বিলাসবহুল লঞ্চ চলাচল করে ২৪টি, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জের মধ্যে ১৪টি এবং দক্ষিণাঞ্চল ও শরীয়তপুরের মধ্যে ৮টি। এসব এলাকার লোকজন ভাড়া বাড়ার কোনো নোটিশ কিংবা ঘোষণা পায়নি।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুর থেকে লঞ্চ ভাড়ানোর ঘোষণা করা হয়।এর পর থেকে লঞ্চ ঘাটে যাত্রী সংখ্যা কমতে থাকে লঞ্চ ঘাটে।
ভাড়া বাড়ানোর কারণে অনেক সংখ্যাক যাত্রীই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
এটি নিয়ে ফেসবুক সরব যাত্রীরা। তারা ভাড়া বৃদ্ধি সমালোচনা করে ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ ও করছেন। চান সরকারের হস্তক্ষেপ।
এমভি সোনার তরী-৩ লঞ্চঘাটে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষমান। এটি ঢাকার উদ্দেশে চাঁদপুর ঘাট থেকে ছেড়ে যায় বিকেল পৌনে ৪টায়। এই লঞ্চের মেহেদী হাসান ও মিরাজ বলেন, আমরা নিচ তলার ডেকের যাত্রী। লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে জানি না। অতিরিক্ত টাকাও নিয়ে আসেনি। লঞ্চে এসে দেখি ১৫০ টাকার ডেকের ভাড়া ২০০ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে প্রথম পড়লাম।
আরেক যাত্রী খুচরা ফল ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, জরুরি কাজে ঢাকা যেতে হচ্ছে। লঞ্চে এসে দেখি ভাড়া বেশি। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে যেন ভাড়া না বাড়ানো হয়। কারণ লঞ্চ নিরাপদ বাহন হিসেবে আমরা বেশি যাতায়াত করি।
এমভি সোনার তরী ও বোগদাদিয়া-৭ লঞ্চের কেরানিদের (করণিক) সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সরকারিভাবে ৩০ ভাগ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আমরা সেভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছি। ঢেকের ভাড়া ২০০ টাকা, প্রথম শ্রেণী এসি চেয়ার ৩৫০ টাকা, বিজনেস ক্লাস এসি চেয়ার ৪৫০ টাকা এবং নিচ তলার চেয়ার ২৭০ টাকা। সরকারি ভাড়া আরও বেশি। কিন্তু আমরা কিছু কম নিচ্ছি।