আগামী বছর যথাসময়ে বই বিতরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা
খোলাবাজারে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ঘাটতি আর জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে আগামী বছর যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা যাবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২৩ সালে বিতরণের জন্য ৩৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৩ হাজার বই ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বই মুদ্রণে যাওয়ার আগে সম্ভাব্য দর ঠিক করে দেয় এনসিটিবি। পরে কাজের অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠানো হয়। কিন্তু কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির পূর্বে উভয় ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ কমে দরপত্র দাখিল করেছিলেন মুদ্রাণকারীরা। ফলে বর্তমানে সব ক্ষেত্রে কাঁচামালের মূল্য চড়া হওয়ায় প্রাথমিকের কাজ নেয়নি পাঁচ প্রতিষ্ঠান।
মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, দর সমন্বয় না করলে এবার যথাসময়ে পাঠ্যবই ছাপানো যাবে না এটা আমি জোর দিয়ে বলতে পারি।
আরও পড়ুন: ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন বই পাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা।
জহুরুল ইসলাম বলেন, মুদ্রণকারীরা যে সময়ে প্রতিযোগিতা করে কম দরে দরপত্র জমা দিয়েছিলেন, এখন কাঁচামালের সেই বাজারদর থাকলে হয়তো কম লাভে তারা কাজ করতে পারতেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষতি থেকে বাচতে ইতোমধ্যে অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠান কাজ করবে না বলে চিঠি দিয়েছে। আর যদি এনসিটিবি দর পুনর্বিবেচনা না করে তাহলে এ তালিকা আরও দীর্ঘ হবে বলেও জানান তিনি।
জানা যায়, খোলা বাজারে ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় যে কাগজ মিলের মূল্য ৯৫ হাজার টাকা ছিল তার বর্তমান মূল্য ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। ফলে উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। তাই দর সমন্বয় পুনর্বিবেচনা না করলে অনেকেই কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন মুদ্রণকারীরা।
সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, এনসিটিবি চেয়ারম্যান ও অন্যান্য মন্ত্রী-সচিবরা বাস্তবতা বুঝলেও বাধা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট সদস্যরা। এমন চলতে থাকলে কাজ করার কোন লোক থাকবে না।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, বাজার দরের চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, মুদ্রণকারীরা সরকারের সম্ভাব্য দরের চেয়েও কম দাম দিয়েছেন। তাই এখন সংকট তৈরি হয়েছে। এখন সমস্যা থেকে বের হতে মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চাওয়া হবে।