বাস ভাড়া বৃদ্ধিতে বেশি ভোগান্তিতে চাকরিপ্রার্থীরা
বাসের ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়া বিপাকে পড়েছেন বাসে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীরা। বারে বারে ভাড়া বৃদ্ধিতে অনেকটা বিরক্ত তারা। নিয়মিত যাত্রীদের সঙ্গে বাস ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশি বেকায়দায় পড়েছেন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় (দূর পাল্লা) গিয়ে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়া প্রার্থীরা। বাস ভাড়া ভাড়ায় বেকারত্বের ধকল সামলাতে না পারা এসব চাকরিপ্রার্থীরা ব্যাপক ভোগান্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
দেশে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর বাস ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে দূর পাল্লায় ৪০ পয়সা এবং নগরে ৩৫ পয়সা বাড়ানো হয়। গত শনিবার (০৫ আগস্ট) রাতে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকের পর এ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
যারা নিয়মিত চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকায় বা অথবা অন্য জেলায় যান তারা বাসের ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় পড়েছেন ভোগান্তিতে। দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বেড়ে এক টাকা ৮০ পয়সা হয়েছে। মহানগরে বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে দুই টাকা ১৫ পয়সা।
চাকরিপ্রার্থী বেশীরভাগই বেকার। অনেকেই চলেন টিউশনি করে। পড়াশোনা শেষ হবার পর কেউ পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বাস-ভাড়া নিয়ে পরীক্ষা দিতে ঢাকায় আসে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ঢাকা যাওয়া-আসার খরচ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: অক্সফামে চাকরির সুযোগ, বেতন ১৮ লাখের বেশি
নাজমুল হোসেন জানান, কুষ্টিয়া থেকে ঢাকার নন-এসি বাসের ভাড়া ৭০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এসি বাসের ভাড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া ঢাকায় থাকা ও খাওয়াতেও এর প্রভাব পড়বে। অনেক সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে আবেদন করেছি। সব পরীক্ষা প্রায় শুক্রবার ও শনিবারে হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেয়।
মেহেরপুর থেকে নাঈম নামে চাকরিপ্রার্থী বলেন, বৃহস্পতিবারের ঢাকার টিকিট কাটতে গিয়ে শুনি, নন-এসি ভাড়া ৭৬৬ টাকা হয়ে গেছে। ঢাকায় গেলে বিভিন্ন বন্ধু ও আত্মীয়ের বাসায় থেকে চাকরির পরীক্ষা দিতে হয়। তাদের বাসায় এখন গিয়ে উঠতে খারাপ লাগবে। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুরে দাম ও বেড়ে গেছে। আগেও হতাশ ছিলাম। তবে এখন আরও বেশি হতাশ।
আরেক চাকরিপ্রার্থী আরিফ বলেন, রাজশাহী থেকে ঢাকায় চাকরির পরীক্ষা দিতে এ পথে ভাড়া ৬০০ টাকা ছিল। এখন ৭২০ টাকা দিতে হচ্ছে। এভাবে চললে বেকাররা বিপদে পড়বে। বেকারদের এমনিতেই টাকার সমস্যা।
অনেক পরীক্ষার্থী যাদের থাকার জায়গার সমস্যা আছে। এই পরিস্থিতে হোটেলে থেকে চাকরির পরীক্ষা দিলেও খরচে চালাতে পারবে না। ঢাকার বাইরে থেকে হাজারো চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিতে আসেন। অনেকেই সব ধরনের চাকরির আবেদন করেন। বাসের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় ফলে অনেকে চাকরিতে আবেদনের সংখ্যা কমিয়ে দিতে চাইবে।
দূরপাল্লা বাসে যাতায়াতকারী এসব চাকরিপ্রার্থী ছাড়াও নগরীর যাত্রীরাও ভোগান্তিতে রয়েছেন। মিরপুর থেকে আজিমপুর গিয়ে নিয়মিত অফিস করতে হয় আশিকুর রহমান নামে এক যুবকের। তিনি বলেন, আগে যে ভাড়ায় দুইবার যাতায়াত করতাম সেখানে এখন একবারের ভাড়াও হয় না; আরও বেশি লাগছে। বেতনের একটি বড় অংশ এ ভাড়াতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। পরিবার চালানো নিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।