‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিবো কিসে?’
জ্বালানি তেলের ৩৭% শুল্ক ও কর মওকুফের দাবিতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ আগস্ট) সেগুনবাগিচা এলাকায় ‘গরীব-মাধ্যবিত্তদের বাঁচতে দাও’ ব্যানারে বেলা ১১টায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ‘গরীব-মাধ্যবিত্তদের বাঁচতে দাও’ শিরোনামে আয়োজিত কর্মসূচির ব্যানারে আরও দেখা গেছে ‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিবো কিসে?’। মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে ৩৭% শুল্ক ও কর মওকুফের দাবি জানানো হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, করোনায় লকডাউন, বন্যা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এমনিতেই দেশের অর্থনীতি ভালো নেই। সব কিছুর দাম বেড়েছে। গরীবরা ঠিক মত খেতে পায় না, মধ্যবিত্তরা খাবার কম খায়। সংসার চালাতে মা তার সন্তানকে বিক্রি করে দিচ্ছে। বাবা কিডনী বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেয়। ঋণের চাপে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে দেশে।
আরও পড়ুন: 'আইএমএফের ঋণ পেতে' বাড়ানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম
ইমতিয়াজ আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন দামে ডিজেল ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা, পেট্রোল ১৩০ টাকা করা হলো। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয়ের কথা বলা হয়েও এই মূল্য প্রকৃতমূল্য নয়, সরকারের নানা প্রকার শুল্ক ও কর সহকারে মূল্য। এই মুল্যের মধ্যে শুল্ক ১০%, ভ্যাট ১৫%, অগ্রীম আয়কর ৫%, অগ্রীম ভ্যাট ৫% সহ মোট শতকরা ৩৭% হচ্ছে সরকারী শুল্ক ও কর। এ যেন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এক বিরাট লাভজনক ব্যবসা।
মানববন্ধনে রাহাত বলেন, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ব্যাপক হারে বেড়েছে পরিবহন ভাড়া। আর যেহেতু পরিবহনের সাথে সকল মৌলিক খাত জড়িত, তাই জ্বালানি তেলের বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সকল জীবন ব্যয় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা দেশের ৯৯% জনগণের জন্য সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।
মুহম্মদ নুরুল শান্ত বলেন, জনগণের জন্যই রাষ্ট্র, জনগণের জন্যই সরকার। সেই জনগণকে পেষণ করে রাষ্ট্র তার লাভজনক ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পারে না। আজকে যদি কোন সাধারণ ব্যবসায়ী ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লাভ করতো, তবে সেটাকে অতি উচ্চ লাভ হিসেবে দেখা হতো। এ ব্যবসা চলতে থাকলে দেশে দুর্ভিক্ষ সুনিশ্চিত, যেখানে কোটি কোটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের মৃত্যু অবধারিত।