শতকোটির মাইল ফলক স্পর্শ করল পদ্মা সেতুর টোল
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ৪২ দিনের মধ্য টোল আদায় ১০০ কোটি টাকার মাইল ফলক স্পর্শ করলো।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, উদ্বোধনের পর থেকে ৪২ দিনে সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১০১ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। আর যান চলাচল শুরুর পর সেতু দিয়ে পাড়ি দিয়েছে ৯ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ যানবাহন। এর আগে, প্রথম ২০ দিনে সেতুতে টোল আদায় ছাড়িয়েছিলো অর্ধশত কোটি টাকা।
এই টোলের মধ্যে রাজধানী হয়ে দক্ষিণের মুখে আদায় কিছুটা বেশি। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চল থেকে নদী পারের আদায় কিছুটা কম, যদিও এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য খুব একটা বেশি নয়।
অর্থাৎ দিনে গড়ে টোল আদায় হচ্ছে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার বেশি। এই টোলের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ টোল আদায় হয়েছে গত ৮ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়। ঈদের ছুটির আগে আগে ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে সেদিন আদায় হয় ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫০ টাকা।
সেতু চলাচলের প্রথম ২০ দিনে টোল আদায় ছাড়িয়ে ছিল অর্ধশত কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রথম ২০ দিনের সমপরিমাণ টোল আদায় করতে সময় লেগেছে এর পরের ২২ দিন।
আরও পড়ুন: রাবির বুক থেকে কমে গেছে ৩ একরের অধিক জায়গা
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২৬ জুন থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জের মাওয়া টোল প্লাজা হয়ে সেতু পাড়ি দিয়েছে ৫ লাখ ২৪ হাজার ৫৩৮টি যান। এতে টোল আদায় হয়েছে ৫০ কোটি ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫০ টাকা।
অন্যদিকে শরীয়তপুরের জাজিরা টোল প্লাজা হয়ে সেতু পাড়ি দিয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩০২টি যানবাহন। এতে আদায় হয়েছে ৫০ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ৫৫০ টাকা।
অর্থাৎ রাজধানীর দিক থেকে দক্ষিণমুখী গাড়ি পারাপারে টোল বেশি আদায় হয়েছে ৩৬ লাখ টাকার কিছু বেশি।
পদ্মা সেতুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন বলেন, ‘এরই মধ্যে শতকোটি টাকা টোল আদা হয়েছে গতকাল দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত। তবে, আমরা আরও কাজ করছি স্বচ্ছন্দে এবং অল্প সময়ে বিনা বাধায় টোল আদায় করা হবে। এ ট্র্যাক বসানো হলে অতি দ্রুত না থেমে এবং কার্ডের মাধ্যমে টোল আদায় করা হবে। ডিসেম্বরের নাগাদ এ কার্যক্রম শুরু হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
গত ২৫ জুলাই বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ২৬ জুলাই ভোর থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মোচিত হয় সেতুটি। সেতুতে বিশৃঙ্খলা এড়াতে বন্ধ রয়েছে মোটরসাইকেল চলাচল। এদিকে সেতুতে বর্তমানে রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে।
অর্থাৎ সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের ০.৩৩ শতাংশের মতো উঠে এসেছে দেড় মাসেরও কম সময়ে। এই হারে টোল আদায় হলে সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা উঠবে ৩৭ বছরে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এই রুটে গাড়ি বাড়বে এবং নির্মাণ ব্যয় ২০ বছরে উঠে আসবে। সেটি করতে হলে বর্তমান হারের চেয়ে টোল আদায় বাড়াতে হবে পৌনে দুই গুণ।