‘ব্ল্যাকমেইলের শিকার’ হয়ে আত্মহত্যা করেন কলেজছাত্রী স্মৃতি
উত্যক্ত ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রী স্মৃতি রানী দাস (২০)। এ ঘটনায় দুই মাস পর শ্যামল দাস (২১) নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) জালালাবাদ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শ্যামল দাস হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সুধাংশু দাসের ছেলে। শাহপরাণ (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারের পর বিকালে জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য শ্যামলকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আাদালতের বিচারক সাইফুর রহমানের কাছে হাজির করা হয়। জবানবন্দিতে তিনি জানান, স্মৃতির ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেন শ্যামল। তাকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে আসছিলেন। মানসম্মানের ভয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ওই ছাত্রী।
স্মৃতি রানী দাস এমসি কলেজের ইংরেজি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার যুগল কিশোর দাসের মেয়ে। গত ২৫ মে এমসি কলেজের নতুন ছাত্রী হোস্টেলের চারতলার ৪০৩নং কক্ষ থেকে স্মৃতি রানী দাসের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি হোস্টেলের তৃতীয় তলায় ৩০৭নং কক্ষে থাকতেন। স্মৃতি আত্মহত্যা করেছিলেন বলে তখন জানিয়েছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন: চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণে জড়িত আরও দু’জন গ্রেপ্তার
আদালত সূত্র জানায়, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার আইডি হ্যাক করে স্মৃতির ব্যক্তিগত ছবি নিয়ন্ত্রণে নেয় শ্যামল। এরপর আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মানসিক চাপে ফেলে। তার কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করতো। এই ঘটনায় স্মৃতি আত্মহত্যা করবে, তা ভাবতে পারেনি। সর্বশেষ তার কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা বিকাশে নেয়। বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। স্মৃতির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের লক খুলতে পারলে আরও তথ্য জানা যাবে। ফোনটি সিআইডির মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
শাহপরাণ (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুল হক জানান, স্মৃতির বাবা বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছেন। ওই মামলায় শ্যামলকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। এরপর পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।